FX.co ★ SumonIslam | রাশিয়ায় চীনা গাড়ি রফতানিতে উল্লম্ফন
রাশিয়ায় চীনা গাড়ি রফতানিতে উল্লম্ফন
রাশিয়ায় চীনের তৈরি গাড়ি বিক্রি রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে রাশিয়া হয়ে উঠেছে এশিয়ার শীর্ষ অর্থনীতির দেশটির সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার। নিষেধাজ্ঞার কারণে পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হওয়ায় মূলত চীনের এ সুযোগ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় বিক্রির পরিমাণ এমন সময় বাড়ল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গাড়ি রফতানির ক্ষেত্রে চীনকে অতিরিক্ত শুল্কের মুখে পড়তে হচ্ছে এবং রাশিয়ার অটো খাতে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। এ বিষয়ে মস্কোভিত্তিক কার ব্লগার ইলিয়া ফ্রোলোভ বলেন, ‘পকেটের অবস্থা বুঝে রাশিয়ার মানুষ গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আপনি যদি একটা গাড়ি কিনতে চান, তাহলে আপনাকে হয় লাদা (রাশিয়ান ব্র্যান্ড) কিনতে হবে, অথবা অনেক বেশি টাকা খরচ করে ইউরোপের গাড়ি কিনতে হবে। আর কম দামে তুলনামূলক ভালো পণ্য পেতে চাইলে নিতে হবে চীনের গাড়ি।’
ডাটা বিশ্লেষক সংস্থা অ্যাভটোস্ট্যাট বলছে, ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পর রাশিয়ায় ইউরোপ, জাপান ও কোরিয়ান গাড়ি ব্র্যান্ডগুলোর সরবরাহ কমে যায়। যদিও আগে রাশিয়ার বাজারে এসব দেশের ব্র্যান্ডের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। ২০২২ সালে যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু হয়, তখনো রাশিয়ার গাড়ির বাজারের ৬৯ শতাংশ এসব দেশের কব্জায় ছিল। বর্তমানে তাদের সে শেয়ার নেমে এসেছে সাড়ে ৮ শতাংশে। একই সময়ে রাশিয়ায় চীনের তৈরি গাড়ির মার্কেট শেয়ার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ শতাংশ।
চায়না প্যাসেঞ্জার কার অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিসিএ) হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাস (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) চীনের কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি গাড়ি রফতানি করেছে রাশিয়ায়। এ সময়ে ৮ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫১ ইউনিট গাড়ি রফতানি করেছে তারা। রফতানি গন্তব্যে রাশিয়ার পরই ছিল মেক্সিকো। দেশটিতে নয় মাসে রফতানি হয় প্রায় ২৫ হাজার গাড়ি।
সিপিসিএর সাধারণ সম্পাদক কুই দোংশু বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনের গাড়ি রফতানিতে রাশিয়ার বাজারের অবদানই বেশি। রাশিয়ার অটো মার্কেটের নাটকীয় উত্থান-পতন ও প্রতিযোগিতার ধরনে পরিবর্তন আসার কারণে চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য বিক্রি বাড়ার পাশাপাশি ব্যাপক মুনাফার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
চলতি বছরের প্রথম আট মাসে রাশিয়ায় চীন যেসব গাড়ি রফতানি করেছে, সেগুলোর ৯০ শতাংশই সাধারণ (ইন্টারনাল কমবিউশন) ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ১৫ হাজার হাইব্রিড এসইউভি গাড়িও রফতানি হয়েছে। গাড়িগুলো তৈরি করেছে ইভি গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লি অটো।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাশিয়ার মার্কেটে চীনের উপস্থিতি এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে শুধু ক্রেতারাই আকৃষ্ট হচ্ছেন না, গাড়ি নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত পেশাদাররাও প্রতিনিয়ত এ বাজারে যুক্ত হচ্ছেন।
চীনের শুল্কসংক্রান্ত তথ্য বলছে, দেশটির কোম্পানিগুলো গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ায় ১৮০ কোটি ডলার সমমূল্যের গাড়ি রফতানি করেছে। ২০২১ সালের একই মাসে এ পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
রাশিয়ায় গাড়ি রফতানিতে ইউরোপ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণেও দেশটির ক্রেতারা চীনা গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন।
* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়