সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবার কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বর্তমানে আসল বিষয় হচ্ছে—এই প্রতিবেদনের গুরুত্ব নয়, বরং মার্কেটের ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনগুলোর প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে — এবং আদৌ কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবে কি না সেটই আসল বিষয়। এটা আর কোন গোপন বিষয় নয় যে গত দুই মাস ধরে মার্কেটের ট্রেডাররা কার্যত কেবল "ট্রাম্প সংবাদের" ভিত্তিতেই ট্রেড করছে; বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঘোষণা মার্কেটে আরও এক দফা ডলার বিক্রির সংকেত দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আজকের প্রতিবেদনের প্রভাবে ডলারের মূল্য সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে, তবে সামগ্রিকভাবে প্রবণতার পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম। আজকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ ছাড়া অন্য কোন মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার খুব বেশি প্রাসঙ্গিকতা এখন আর নেই। অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত ডলারের দরপতন চলমান থাকতে পারে। আমরা ট্রেডারদের পরামর্শ দেব, বড় দেশ ও জোটগুলোর শীর্ষ নেতাদের শুল্ক বিষয়ক বক্তব্য ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোজোনে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় "সামান্য অগ্রগতি" অর্জন করেছেন। তবে "সামান্য অগ্রগতি" ডলারকে সহায়তা করার জন্য যথেষ্ট নয়। এদিকে ট্রাম্প সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যা বিশ্বব্যাপী অনেক দেশকে প্রভাবিত করবে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ এখনো অমীমাংসিত অবস্থাত রয়েছে এবং সেটিই এখন পর্যন্ত মার্কেটের ট্রেডারদের কাছে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে যেকোনো দিকেই উভয় কারেন্সি পেয়ারের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের স্থিতিশীল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, অন্যদিকে ইউরোর মূল্যের মূলত ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। আজকের নির্ধারিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলো কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে প্রভাব ফেলতে পারে, তবে মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া একেবারেই অনিশ্চিত। টেকনিক্যাল লেভেলগুলোও ধারাবাহিকভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে না এবং অনেক সময় একেবারেই উপেক্ষিত থাকছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।