বৈশ্বিক অর্থবাজার এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের গৃহীত পদক্ষেপের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, যা পূর্বে প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক কাঠামোকে ব্যাহত করছে। স্বাভাবিকভাবেই, এটি মার্কেটের ওপর প্রভাব ফেলছে। তবে, মার্কেটের ট্রেডাররা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলো অনুমান করার চেষ্টা করছে, এবং এজন্য তারা নতুন অর্থনৈতিক প্রতিবেদন ও ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
এই সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি ফেডের বৈঠকের ফলাফলের দিকে থাকবে। যদিও সুদের হারে কোনো পরিবর্তনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে না, তবে মূল দৃষ্টি এই বৈঠকের ফলাফলের চূড়ান্ত ঘোষণার ওপর এবং বিশেষ করে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের দিকে থাকবে।
এই সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রয়, শিল্প উৎপাদন এবং আবাসন বাজার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে বিল্ডিং পারমিট বা নির্মাণ অনুমোদন এবং পুরাতন বাড়ি বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন রয়েছে।
এছাড়াও, এই সপ্তাহে জাপান, চীন, যুক্তরাজ্য এবং সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মুদ্রানীতি সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
কানাডা ও জাপানে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, আর চীনের পরিসংখ্যান সংস্থা থেকে দেশটির খুচরা বিক্রয়, শিল্প উৎপাদন, আবাসন মূল্যসূচক এবং স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগের তথ্য প্রকাশ করা হবে।
ইউরোপে, বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি কর্মসংস্থানের তথ্য, যুক্তরাজ্যের GFK ভোক্তা আস্থাসূচক, জার্মানির অর্থনৈতিক মনোভাব সূচকের দিকে থাকবে, সেইসাথে নিউজিল্যান্ডের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার এবং কানাডার খুচরা বিক্রয় পরিসংখ্যানের দিকেও দৃষ্টি দেয়া উচিত।
ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি (FOMC) বৈঠক থেকে ট্রেডাররা কী আশা করছে?
ফেডের মূল সুদের হার ৪.২৫%–৪.৫০% এর মধ্যে বজায় রাখার সম্ভাবনা রয়েছে, যা এই বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া সুদের হার হ্রাসে বিরতির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করবে।
ফেডের কর্মকর্তারা ট্রাম্পের গৃহীত নীতির কারণে চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা বিবেচনা করে সতর্ক অবস্থান নিতে পারে।
এর ফলে মার্কেটে কী প্রভাব পড়তে পারে?
আগেও উল্লেখ করেছি, ট্রাম্পের নীতির সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো আর্থিক সম্পদে পূর্ণমাত্রায় বিনিয়োগ করতে অনীহা দেখাচ্ছে।
মার্কিন অর্থনীতির আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের বাস্তব ঝুঁকি রয়ে গেছে, কারণ চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ দেশটিকে একটি কাঠামোগত সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, স্টক মার্কেটের অব্যাহত দরপতন দেখা যেতে পারে, যার প্রভাব ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটেও পড়বে।
মার্কিন ডলারও অনিশ্চয়তার কারণে ব্যাপক চাপের মুখে পড়তে পারে, এবং সবচেয়ে সেরা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ICE সূচকের ১০৪.০০ লেভেলের কাছাকাছি কনসোলিডেট হতে পারে।
এদিকে, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের দর অবশেষে $৩,০০০ প্রতি আউন্সের সাইকোলজিক্যাল লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যেতে পারে।
আজ মার্কেটে কী আশা করা যায়?
আমি মনে করি, ফেডের মুদ্রানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রকাশের আগে মার্কেটে তেমন কোনো শক্তিশালী মুভমেন্ট দেখা যাবে না, এবং পূর্ববর্তী প্রবণতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
আজকের পূর্বাভাস:
#Bitcoin
মার্কিন প্রেসিডেন্টের গৃহীত নীতি সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে বিটকয়েন চাপের মুখে রয়েছে।
বিটকয়েনের মূল্য 84,545.00 লেভেলের শক্তিশালী রেজিস্ট্যান্স অতিক্রম করতে ব্যর্থ হলে, পুনরায় 78,000.00 লেভেলে দরপতন হতে পারে।
#Litecoin
মার্কিন প্রশাসনের নীতিমালা সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে লাইটকয়েন প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছে।
যদি এটির মূল্য 94.00 লেভেলের শক্তিশালী রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করে উপরে উঠতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আরও দরপতন হয়ে মূল্য 86.00 লেভেলে নেমে যেতে পারে।