দিনের বেশির ভাগ সময় EUR/USD পেয়ারের মূল্য স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে। আমরা ক্রমাগত এই বিষয়টি উল্লেখ করছি কারণ আমরা এটিকে অপরিহার্য মনে করি। যদি মার্কেটে কোন মুভমেন্ট না থাকে, তাহলে ট্রেড ওপেন করার মানে কি এবং কীভাবে লাভের আশা করা যায়? গতকাল, এই পেয়ারের মূল্য আগের স্থানীয় সর্বোচ্চ লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছেছিল। এখন আমরা আশা করতে পারি এই পেয়ারের মূল্য মারে লেভেল "-1/8" - 1.0681-এ ফিরে আসবে। আমরা আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে বিশ্বব্যাপী, এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট নয় বরং একটি সাইডওয়েজ প্রবণতায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। 24-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে 1.0650 এবং 1.1000 লেভেলের মধ্যে এই পেয়ারের ট্রেডিং করা হয়েছে৷ এই পেয়ারের মূল্য সংক্ষিপ্তভাবে দুইবার এই রেঞ্জ ছেড়েছিল, তাই, আমরা আশা করছি না যে ইউরোর দরপতন হবে। এটি শেষ স্থানীয় সর্বোচ্চ লেভেল ও শেষ মধ্যমেয়াদী সর্বোচ্চ লেভেলে ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নগামী প্রবণতা মন্থর গতিতে অব্যাহত রয়েছে। ধীরে ধীরে ইউরোর দরপতন ঘটবে কিন্তু এই পেয়ারের মূল্যের খুব দুর্বল মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে। যাইহোক, এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান অস্থিরতার সূচক দেখে বোঝা যাচ্ছে যে আমরা সঠিকভাবে।
ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক যদি মুদ্রানীতি নমনীয় করা শুরু করে এবং সূদের হারের হ্রাসের ক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভের সূদের হার সাথে ব্যবধান বাড়াতে শুরু করে তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে ইউরোর মূল্য কীভাবে বাড়তে পারে তা আমরা বুঝতে পারছি না। এই ধরনের মৌলিক পরিস্থিতির অধীনে ইউরোর মূল্যের উত্থান সমস্ত ধরণের বিশ্লেষণের সাথে বিরোধিপূর্ণ। অবশ্যই, মার্কেটে এই ধরনের পরিস্থিতি একটি উপায়েই চলতে পারে, এবং সেটি হচ্ছে মার্কেট মেকার এবং অন্যান্য বড় ট্রেডারদের কারসাজি, কারণ তারা ইসিবি বা ফেডের আর্থিক নীতিমালা বিবেচনা করতে বাধ্য নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি যুক্তি কাজ করে। যদি ইসিবির সূদের হার কমে যায় এবং ফেড সূদের না কমে, তাহলে সেটি এই ইঙ্গিত দেবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইউরোজোনের চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা আরও অনুকূল হারে ব্যাংকে আমানত হিসেবে টাকা রাখতে পারেন এবং উচ্চ লভ্যাংশ সম্পন্ন সরকারী বন্ড কিনতে পারেন। অতএব, বিষয়টি এমনও নয় যে মার্কেট মেকাররা মার্কেটকে যেকোন দিকে নিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে মূল প্রভাবক হচ্ছে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং মূলধন প্রবাহ।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং মৌলিক পটভূমির কথা বলতে গেলে, সপ্তাহের প্রথম দুই দিনে কোনও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তবে কংগ্রেসে ফেডের প্রধান জেরোম পাওয়েলের বক্তৃতা দিয়েছেন। আমরা এখনই পাওয়েলের বিবৃতি সম্পর্কে কোন উপসংহার টানব না কারণ আমরা মনে করি যে তার দ্বিতীয় বক্তৃতার জন্য অপেক্ষা করা উচিত, যা আজ অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে পাওয়েল যা বলেছেন তা নয়, বরং তিনি কংগ্রেসম্যানদের প্রশ্নের উত্তর কীভাবে দেবেন সেটিই মূল বিষয় হবে। অতএব, আমরা পরবর্তী প্রবন্ধে সিদ্ধান্ত আসব। যাইহোক, সামনের দিকে তাকিয়ে বলা যায় এখন পাওয়েলের বক্তব্যে নমনীয় অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিতের আশা করা অত্যন্ত কঠিন। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশের পরে আশা করা যেতে পারে, বিশেষত যদি এই সূচকে উল্লেখযোগ্য পতন দেখা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জুনের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে, তাই পাওয়েল তার বক্তব্যে নমনীয় অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দেয়ার কোন কারণ পাবেন না। মুদ্রাস্ফীতির বর্তমান স্তর অনুযায়ী এখনও সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে সূদের হারে প্রথম হ্রাসের সম্ভাবনা নেই, বরং ডিসেম্বরে সূদের হার কমানো হতে পারে।
10 জুলাই পর্যন্ত বিগত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের গড় অস্থিরতা হল 45 পিপস, যা একটি নিম্ন মান হিসাবে বিবেচিত হয়। আমরা আশা করছি যে বুধবার এই পেয়ারের মূল্য 1.0766 এবং 1.0856 এর মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল উপরের দিকে যাচ্ছে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অটুট রয়েছে। CCI সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, কিন্তু এর ফলে ইতোমধ্যে একটি বুলিশ কারেকশন দেখা গিয়েছে যা দিয়ে ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
S1 - 1.0803
S2 - 1.0742
S3 - 1.0681
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
R1 - 1.0864
R2 - 1.0925
R3 - 1.0986
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
বিশ্বব্যাপী EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যখন 4-ঘন্টার টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য বাড়ছে। পূর্ববর্তী পর্যালোচনাগুলিতে, আমরা বলেছিলাম যে আমরা বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতার আশা করছি। যাইহোক, এখন আমরা অস্বীকার করতে পারছি না যে বেশ কয়েকটি কারণে ইউরোর মূল্য আবার বাড়ছে। দুদুর্ভাগ্যবশত, মার্কেটের ট্রেডার এবং অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উভয়ই এখন ডলারের বিপরীতে কাজ করছে। আমরা মনে করি যে এখনই নতুন করে এই পেয়ারের মূল্যের বৈশ্বিক প্রবণতা শুরু হবে না কারণ ইসিবি আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করেছে, তাই সম্ভবত এই পেয়ারের মূল্য 1.0650 এবং 1.1000 এর লেভেলের মধ্যে ওঠানামা করতে থাকবে। এই পেয়ারের মূল্য মুভিং এভারেজের নিচে কনসলিডেট হওয়ার পর ট্রেডাররা এই রেঞ্জের উপরের অংশে শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারে। এক্ষেত্রে 1.0681 লেভেলের কাছাকাছি লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হবে।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।