logo

FX.co ★ আবার মার্কিন ডলারের দরপতন হচ্ছে

আবার মার্কিন ডলারের দরপতন হচ্ছে

আবার মার্কিন ডলারের দরপতন হচ্ছে

মার্কিন মুদ্রা আবারও সম্ভবত দরপতনের মুখোমুখি হয়েছে। যাইহোক, মার্কিন ডলার এই দরপতন প্রতিরোধ করছে এবং প্রায়শই সফল হচ্ছে। এদিকে, পরিস্থিতি ইউরোপীয় মুদ্রার জন্য খুব কমই অনুকূল। ইউরোর মূল্যের দীর্ঘায়িত এবং আত্মবিশ্বাসী বৃদ্ধি বজায় থাকা কঠিন যা মৌলিকভাবে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে।

গত সপ্তাহের শেষে, EUR/USD পেয়ার আরেকটি দরপতন প্রদর্শন করেছে, যা পরের সপ্তাহের শুরুতে অব্যাহত ছিল। গত সপ্তাহে ইউরোজোনের মুদ্রাস্ফীতির তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর, ইউরোপীয় মুদ্রার দর উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, এই অঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমেছে, তবে এই খবরটি ইউরোর জন্য নেতিবাচক বলে প্রমাণিত হয়েছে। গ্রীষ্মের প্রথম মাসে, জার্মানির বেকারত্বের হার আগের 5.6% থেকে বেড়ে 5.7% হয়েছে। বিশ্লেষকরা আশা করছিলেন যে এই হার মে মাসের মতো 5.6% থাকবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে, EUR/USD পেয়ার তার কিছু অবস্থান ছেড়ে দিয়েছে এবং নিচের দিকে চলে গেছে। তবে, এই পেয়ারের মূল্য নিম্নগামী প্রবণতা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছে কিন্তু সফল হয়নি। সোমবার সকালে, 3 জুলাই, EUR/USD পেয়ারটি 1.0893 এ ট্রেড করছিল, পরে মূল্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হ্রাস পেয়েছে। তবুও, বিশেষজ্ঞরা মাঝারি মেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা করছেন।

আবার মার্কিন ডলারের দরপতন হচ্ছে

মার্কিন মুদ্রারও সামান্য দরপতন ঘটেছে, তবে তা ইউরোর তুলনায় অনেক কম ছিল। 2023 সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শুরু থেকে, ইউরোপীয় মুদ্রা আমেরিকান মুদ্রার বিপরীতে 0.7% দ্বারা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বছরের শুরু থেকে, এটি 2.1% বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন ডলার সূচক (USDX) অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এটি 0.4% বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু 2023 এর শুরু থেকে 0.6% হ্রাস পেয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চলতি মাসটি বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ অস্থির হবে, কারণ বাজারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটতে পারে। ট্রেডার এবং বিশ্লেষকরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান প্রতিবেদন, মুদ্রাস্ফীতির তথ্য, ফেড মিটিং এবং 2023 সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের জন্য কর্পোরেট আয় প্রকাশের দিকে মনোনিবেশ করেছেন।

বুধবার, 5 জুলাই, বাজারের ট্রেডাররা ফেডারেল রিজার্ভের জুনের মিটিং থেকে মিনিট বা কার্যবিবরণী প্রকাশের প্রত্যাশা করছে, যে সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক প্রতি বছর 5% থেকে 5.25% সুদের হার বজায় রেখেছিল। এই পটভূমিতে, বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরা (87.4%) জুলাইয়ের শেষ নাগাদ আরও 25 বেসিস পয়েন্ট সুদের হার বৃদ্ধির আশা করছেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হবে জুনের কর্মসংস্থান প্রতিবেদন, যা মার্কিন শ্রম বিভাগ শুক্রবার, 7 জুলাই প্রকাশ করবে। এটি মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের জন্য অন্যতম প্রধান সূচক, যার উপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী মুদ্রানীতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় নির্ভর করে। বর্তমানে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক মন্থরতার পূর্বাভাস দেওয়া সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অব্যাহত উচ্চ গতির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

প্রাথমিক অনুমান অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার জুন মাসে 3.7% এ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা মে মাসের মতোই। ইতিমধ্যে, নন-ফার্ম পেরোলের সংখ্যা 225,000 বেড়েছে। মে মাসে, এই বৃদ্ধি ছিল 339,000।

বর্তমান পূর্বাভাস অনুসারে মে মাসে 339,000 বৃদ্ধির পরে মার্কিন অর্থনীতিতে 200,000 দ্বারা চাকরির সংখ্যা বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। পূর্বাভাস অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার 3.7% এর বেশি হবে না। বর্তমানে, এই সূচকটি 53-বছরের সর্বনিম্ন 3.4% এর কাছাকাছি রয়েছে।

পরবর্তী রিপোর্ট যা মার্কিন ডলারের মূল্যের গতিবিধি এবং মার্কিন অর্থনীতির পরিস্থিতি নির্ধারণ করবে তা হল জুনের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন, যা আগামী বুধবার, 12 জুলাই প্রকাশিত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান তথ্য ইঙ্গিত করে যে সামগ্রিক এবং মূল CPI বা ভোক্তা মূল্য সূচক হ্রাস পাচ্ছে। খুব ধীরে ধীরে এই পটভূমিতে, ফেডকে নিম্নমুখী মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলা করতে হবে।

বর্তমানে, সামগ্রিক এবং মূল CPI-এর জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক পূর্বাভাস নেই। প্রাথমিক গণনা অনুসারে, বার্ষিক সিপিআই 3.6% থেকে 3.8% পর্যন্ত হবে। মূল সিপিআই যা খাদ্য এবং জ্বালানি দাম বাদ দিয়ে বিবেচনা করা হয়, এটি 5% থেকে 5.2% হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘনিষ্ঠভাবে মূল CPI পর্যবেক্ষণ করবে, যা তাদের মতে, ভবিষ্যতের মুদ্রাস্ফীতিকে সবচেয়ে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করে।

মার্কিন অর্থনীতি এবং আমেরিকান মুদ্রার জন্য তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনটি সুদের হারের বিষয়ে ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত, এই মাসের শেষে 26 জুলাই একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে, আর্থিক বাজারের ট্রেডাররা 25 বেসিস পয়েন্ট হারের সম্ভাবনা মূল্যায়ন করে 87% এ বৃদ্ধি, এবং সুদের হার 13% এ অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা দেখচগে।

এই পটভূমিতে, মার্কিন গ্রিনব্যাক কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হবে। TD সিকিউরিটিজের মুদ্রা কৌশলবিদরা বিশ্বাস করেন যে স্বল্পমেয়াদে মার্কিন ডলারের হ্রাস পাবে কিন্তু তারপর পুনরুদ্ধার করবে। ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বৃদ্ধির চক্রের সমাপ্তি ডলারের জন্য একটি বিয়ারিশ ফ্যাক্টর। এই নেতিবাচক প্রভাব প্রথম কয়েক মাস ধরে থাকে। প্রথম দুই মাসে, মার্কিন গ্রিনব্যাকের দর সাধারণত 2% কমে যায়। TD সিকিউরিটিজের মুদ্রা কৌশলবিদদেড় মতে এটার সম্ভাবনা রয়েছে যে 2023 সালের দ্বিতীয়ার্ধে, মার্কিন ডলার এখনকার তুলনায় নিম্ন স্তরে বাণিজ্য করবে।

কিছু বিশ্লেষকদের মতে, আগামী মাসগুলিতে EUR/USD পেয়ারের সম্ভাব্য দরপতনের প্রধান কারণ হবে মার্কিন ট্রেজারি আয় বৃদ্ধি। আগুনে জ্বালানি যোগ করা হবে মার্কিন ট্রেজারি দ্বারা শুরু করা ঋণ জারির চক্র। বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, 2023 সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে, মার্কিন ট্রেজারি $726 বিলিয়ন সরকারি ঋণ জারি করার পরিকল্পনা করেছে, এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকে, অতিরিক্ত $733 বিলিয়ন। মোট, এর পরিমাণ হবে $1.459 ট্রিলিয়ন।

প্রাথমিক হিসাব নির্দেশ করে যে এই পরিমাণ অর্থ সিস্টেম থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হবে না। সময়ের সাথে সাথে, এই অর্থ সরকারী ব্যয়ের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতে ফিরে আসবে। এটা প্রত্যাশিত যে মার্কিন ট্রেজারি শুধুমাত্র ফেডারেল রিজার্ভ (নগদ ব্যালেন্স) এ তার অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থনীতি থেকে তহবিল প্রত্যাহার করবে। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, 2023 সালের জুন পর্যন্ত, ফেডারেল রিজার্ভে তার ব্যালেন্সে তহবিলের পরিমাণ ছিল $408 বিলিয়ন।

যাইহোক, মার্কিন ঋণ প্রদানের গতি সম্প্রতি তীব্রভাবে ত্বরান্বিত হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে, 22 জুন থেকে 6 জুলাই পর্যন্ত, ট্রেজারি $ 400 বিলিয়ন সংগ্রহ করেছে। সিস্টেম থেকে এই বিপুল ক্ষণস্থায়ী তারল্য প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন। এই পটভূমিতে, মার্কিন ডলারের মূল্যের তীক্ষ্ণ ঊর্ধ্বগতি দেখা গিয়েছিল। ফলস্বরূপ, বাজারে মার্কিন ডলারের ঘাটতি রয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বল্পমেয়াদী ইয়েল্ড বৃদ্ধির প্রমাণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারী ঋণ জারি করার মাধ্যমে তারল্য প্রত্যাহার ডলারের দরপতন ঘটায়। অন্যদিকে, এটি গ্রিনব্যাকের ইতিবাচক গতিশীলতায় অবদান রাখে, যা বিনিয়োগকারীদের ডলার-নির্ধারিত সম্পদ কেনার সুযোগ দেয়। এদিকে, ফেডারেল রিজার্ভ বাজারে ডলারের তারল্য হ্রাস করে, সুদের হার বাড়ায় এবং পরিমাণগত কঠোরকরণের নীতি বাস্তবায়ন করে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকান মুদ্রার যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account