চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবারে প্রথমবারের মত গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার থেকে বুধবার অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেনি।এই নিবন্ধে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠক এবং সম্ভাব্য সিদ্ধান্তগুলোর ব্যাপারে বিশ্লেষণ করা হবে না। কারণ মার্কিন অর্থনীতি এবং মার্কিন ইকুইটি বাজারের সাথে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠক এবং সম্ভাব্য সিদ্ধান্তগুলোর কোন সম্পর্ক নেই। এদিকে, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির আজকের প্রতিবেদন আমাদের নিবন্ধে গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করবে।
প্রথমত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাসিক ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। 2021 সালের দ্বিতীয়ার্ধে জেরোমি পাওয়েলের সবগুলো পূর্বাভাস ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন যে অর্থনীতির উপর মহামারী সৃষ্ট চাপ কমতে শুরু করার সাথে সাথে মুদ্রাস্ফীতি নিজে থেকেই কমতে শুরু করবে। মজার বিষয় হল, গত দুই সপ্তাহে মহামারী সম্পর্কে কেউ কিছু বলেন, যা একটি প্রশ্ন তুলে এনেছে: আদও কোনও মহামারী ছিল কি? তবে সরবরাহ শৃঙ্খলের সমস্যা এখনও রয়ে গেছে। সম্প্রতি রাশিয়া এবং বেলারুশের উপর আরোপিত বিপুল সংখ্যক নিষেধাজ্ঞা আরও বেশি ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে বলে মনে হচ্ছে। গতকাল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল, গ্যাস এবং কয়লা আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা করেছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এবং প্লান্টগুলোকে রাশিয়ার বদলে থেকে অন্য কোথাও থেকে হাইড্রোকার্বন আমদানি করতে হবে। এবং রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের মূল্যের চেয়ে স্বল্প মূল্যে অন্য কোথাও থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি করা অসম্ভব। তা না হলে মার্কিন বাজারে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস রপ্তানি অনেক আগেই বন্ধ যেত।
সর্বোপরি, তেল এবং গ্যাসের মূল্য এখন রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। সুতরাং পণ্য, পরিষেবা, উৎপাদন, রসদ ইত্যাদি খাতেও এই প্রভাব পড়বে। একটি বিষয় পরিষ্কার যে বর্তমান তেলের মূল্য $130 -এ উঠলে, এর অর্থ এই নয় যে সারাবিশ্বে এই দামেই তেল কেনা হবে। ডেলিভারির জন্য কিছু কন্ট্র্যাক্ট কয়েক বছর আগে স্বাক্ষরিত হয় এবং সেটিতে নির্দিষ্ট মূল্য থাকে। অন্য কথায়, তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। এগুলোর দাম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে এবং তেল ও গ্যাসের মূল্য কতক্ষণ সর্বোচ্চ উচ্চতায় থাকবে তার উপর নির্ভর করবে। যতদিন তেল ও গ্যাসের মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে, মুদ্রাস্ফীতি তত বেশি হবে।
সুতরাং, আজকের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদনে ভোক্তা মূল্যের আরেকটি উত্থান প্রদর্শনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বাজারের প্রবণতা একটি একক প্রতিবেদনের ফলাফলের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জানুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতি না বাড়লেও বাজারের সাধারণ প্রবণতা বজায় থাকবে। মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদনে বাজার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, তবে প্রতিক্রিয়া কতটা শক্তিশালী হবে তা দেখার বিষয়। আগে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর ডলারের পতন দেখা গিয়েছিল। তবে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল। একটি জিনিস স্পষ্ট যে নতুন করে মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সহসাই সুদের হারের শক্তিশালী বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। এরকমটি ঘটার সম্ভাবনাই বেশি।