সূরক্ষা সম্পদের চাহিদা অদূর ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। স্বর্ণের মূল্য বাড়ছে। যাই হোক, বাজারের অংশগ্রহণকারীরা রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনার ফলাফলের অপেক্ষায় থাকাকালীন সময়ে সোমবার মার্কিন ডলার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নিচে নেমে আসে। যদিও আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তবে দুইপক্ষের আলোচনায় বসার ইচ্ছা বাজারের আশঙ্কা কিছুটা কমিয়েছে। শীঘ্রই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বিতীয় দফা আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা আরও পরামর্শের জন্য তাদের রাজধানীতে ফিরে এসেছেন।
রাশিয়ার প্রতিনিধি ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেন, "আমরা কিছু পয়েন্ট চিহ্নিত করেছি যা থেকে আমরা সাধারণ অবস্থানের পূর্বাভাস দিতে পারি।" ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াকও একই রকম ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে ডলারের মূল্য আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যান্য সূরক্ষা-সম্পদের মত গ্রিনব্যাকের বৈশ্বিক চাহিদা, ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং অধিক তারল্যের কারণে ডলারের অবস্থান শক্তিশালী থাকবে।
ডাচ মাল্টিন্যাশনাল ব্যাংক ING-এর অর্থনীতিবিদরা বলেন, "যেকোনো ধরনের চাপের জন্য আমরা ক্রস-কারেন্সি বেসিস সোয়াপ মার্কেটের উপর নজর রাখব এবং সেইসাথে ডলারের তারল্যের জন্য কোন বাড়তি চাহিদা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখব – যেমন: ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ECB) ৭ দিন ব্যাপী ডলারের নিলাম।"
মার্কিন ডলার সূচক (DXY) 97.70-এ উচ্চতায় ফিরছে এবং এই স্তর অতিক্রম করে আরো উঁচুতে উঠতে পারে।
ডাচ মাল্টিন্যাশনাল ব্যাংক ING-এর মতে "ইউরো লোকসান এখন পর্যন্ত তুলনামূলক ভালভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।" রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন একটি তথ্য-যুদ্ধ চালাচ্ছে। তারা একে অপরের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে, হুমকি দিচ্ছে এবং একে অপরকে অভিযুক্ত করে চলেছে।
যদিও ইউরোপ জ্বালানীশক্তির উপর অনেক বেশি নির্ভর করে, তবে কিছু প্রতিবেদন ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে যেখানে তারা রাশিয়ান জ্বালানীশক্তির উপর কোটা এবং সীমাবদ্ধতা আরোপের কথা ভাবছে। স্পষ্টতই, এই ধরনের পরিস্থিতিতে ইউরোপকে তার শক্তির জন্য অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে এবং বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে আনতে হবে।
সোমবার, ইউরো/ডলার কারেন্সি পেয়ার 1.1120-এর সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছিল। ইউক্রেন-রাশিয়া আলোচনায় কোন আশ্চর্যজনক অগ্রগতি না হলে, এই সপ্তাহে EUR/USD পেয়ার 1.1000 স্তর ছুঁতে পারে।
এই সপ্তাহটি কেবল রাজনৈতিক নয়, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ঘটনাতেও পূর্ণ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ফেব্রুয়ারি মাসের ইউরোজোনের ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) বুধবার প্রকাশিত হবে। ফ্রান্সে, সিপিআই প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বৃদ্ধি দেখিয়েছিল। কিন্তু পূর্ব-ইউরোপের ঘটনাগুলো দেখে, ইউরোজোনের সিপিআই শক্তিশালী হলে ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) আরও কঠোর হয়ে উঠতে পারে। EUR/USD এর জন্য এখনও বিয়ারিশ মনোভাব অব্যাহত রয়েছে।
কিছু বিশ্লেষক ইউরোজোনে আর্থিক নীতি কঠোর হওয়ার আশংকা করছেন। সোসাইট জেনারেল বলেছেন যে, ইসিবির হার বৃদ্ধির প্রত্যাশায় ইউরো শক্তিশালী হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস হলো ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা সুদের হার 25 বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করবে। পরবর্তী ইসিবি সভা ১০ মার্চ নির্ধারিত হয়েছে।
ইউএস বেকারত্বের পরিসংখ্যান সপ্তাহের শেষের দিকে EUR/USD-কে কিছুটা প্রভাবিত করতে পারে। এই সংখ্যাটি 4% পূর্বাভাসের বিপরীতে 3.9% এ নেমে যাওয়ার অনুমান করা হয়েছে, এবং ননফার্ম বেতন $438,000 বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়।