বিটকয়েন ও ইথেরিয়ামের মূল্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে

উইকেন্ডে ট্রেডাররা বিশ্রাম নেওয়ার পর বিটকয়েন ও ইথেরিয়ামের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাম্প্রতিক মুভমেন্টে বুলিশ প্রবণতা ফিরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া গেলে এখনই পূর্ণাঙ্গভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে সেটা বলার সময় এখনও আসেনি। উভয় অ্যাসেটের মূল্য এখনো নিম্নমুখী কারেকটিভ চ্যানেলের মধ্যে রয়েছে এবং এখনো টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়নি। নিচে আমরা এই পেয়ারের টেকনিক্যাল পরিস্থিতি আরও বিস্তারিতভাবে দেখব।

তবে তার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) তাদের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস ম্যানুয়াল (BPM7)-এর সপ্তম সংস্করণ প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রথমবারের মতো বিটকয়েনসহ অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই ডিজিটাল অ্যাসেটগুলোকে 'নন-প্রডিউসড অ্যাসেট' হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে এবং এখন থেকে এগুলো আইএমএফ-এর হালনাগাদ মানদণ্ড অনুযায়ী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের অংশ হবে। আইএমএফ সদস্য দেশগুলোকে উৎসাহিত করেছে যে ২০২৯–২০৩০ সালের মধ্যে BPM7-এর হালনাগাদ ও পূর্ববর্তী উভয় মানদণ্ড গ্রহণ করতে। এছাড়া, আইএমএফ BPM7 বাস্তবায়নে গাইডলাইন এবং টেকনিক্যাল সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমানভাবে ডিজিটাল অ্যাসেটগুলোর গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় মাইলফলক। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ব্যালেন্স অব পেমেন্টসে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে দেশগুলো আরও নির্ভুলভাবে এই লেনদেনগুলো পর্যবেক্ষণ ও হিসাব করতে পারবে। এর ফলে ক্রিপ্টো স্পেসে আরও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ও করব্যবস্থা গড়ে তোলার পথ সুগম হতে পারে।

নতুন মানদণ্ড বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই দেশগুলোর পরিসংখ্যান কাঠামো হালনাগাদ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট জনবলকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তবে আইএমএফের প্রতিশ্রুত সহায়তা থাকায় এই রূপান্তর প্রক্রিয়া আরও মসৃণ হতে পারে এবং বিশ্বজুড়ে BPM7-এর আরও বিস্তৃত ও সুশৃঙ্খল ব্যবহার নিশ্চিত হতে পারে। এই পদক্ষেপটি দ্রুত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে তাল মেলাতে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।

এর আগে উল্লেখ করা হয়েছে, টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, স্বল্পমেয়াদে আবারও বিটকয়েনের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা ফিরে আসতে পারে, তবে এর আগে মূল্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করতে হবে। ইতোমধ্যে ইথেরিয়ামের মূল্য $2,000 লেভেলে ফিরে এসেছে, যা আরও আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়।

বিটকয়েনের ক্ষেত্রে, ক্রেতারা এখন মূল্যকে $87,000 লেভেলে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে, যা মূল্যের $89,500 এবং পরে $91,600-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করতে পারে। যদি বিটকয়েনের মূল্য এই লেভেল ব্রেকআউট করে উপরের দিকে যায়, তাহলে তা মধ্যমেয়াদে মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা ফিরে আসার ইঙ্গিত দেবে। নিচের দিকে, প্রাথমিক সাপোর্ট $85,000 লেভেলে রয়েছে। যদি BTC-এর মূল্য এই জোনের নিচে নামে, তাহলে মূল্য দ্রুত $83,200 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, যেখানে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট $81,500 এ অবস্থিত।

ইথেরিয়ামের ক্ষেত্রে, যদি $2,082 লেভেলের ওপরে মূল্য স্থির থাকে, তাহলে মূল্য $2,123 পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। মূল লক্ষ্যমাত্রা হবে বার্ষিক সর্বোচ্চ $2,168 লেভেল। যদি এই রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করে ফেলা যায়, তাহলে আবার মধ্যমেয়াদে ইথেরিয়ামের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা শুরু হতে পারে। তবে যদি ETH-এর মূল্য কমে যায়, তাহলে ক্রেতারা মূল্যকে $2,027 এরিয়ার সাপোর্ট লেভেলের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবে। মূল্য এই লেভেলের নিচে নামলে $1,989 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে এবং এরপর গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট $1,954 লেভেলে থাকবে।