মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। এই পেয়ারের মূল্য একাধিকবার 1.0596 এর লেভেল ব্রেক করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে এমন পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে একটি হরাইজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে এই পেয়ারের ট্রেড করা হচ্ছে, যা চার্টে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। সোমবার বা মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোজোন থেকে কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি যা মার্কেটে প্রভাব বিস্তার করতে পারত।
গত সপ্তাহেও, যখন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল এবং ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এই পেয়ারের মূল্যের স্থবির মুভমেন্ট অপরিবর্তিত ছিল। ফলে, উপসংহারটি সুস্পষ্ট: এই পেয়ার দুই মাস ধরে দরপতনের মধ্যে রয়েছে এবং এমনকি একটি উর্ধ্বমুখী কারেকশনও হয়নি। এটি নির্দেশ করে যে মার্কেটে আরেকবার ইউরোর দরপতনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে, যা আমাদের পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই পেয়ারের মূল্য দৃঢ়ভাবে 1.0596 লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে নাও যাওয়া ছাড়া ইউরোর মূল্যের আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই বলে মনে হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টমঙ্গলবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যদিও ট্রেডাররা সোমবারের সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে কাজ করতে পারত। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মূল্য 1.0596 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করেছিল, যা মূল্য আগেও একাধিকবার ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়েছিল। মঙ্গলবারের সেল সিগন্যালটি ফলস ছিল, তবে বিয়ারিশ প্রবণতার কারণে এই লেভেলের নিচে দ্বিতীয়বার এই পেয়ারের মূল্যের কনসলিডেশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধরনের মুভমেন্ট আরও দরপতন সূচনা করবে, যেখানে মূল্যের লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.0451 এর লেভেল।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে, গত তিন সপ্তাহ ধরে এই পেয়ারের মূল্যের সামান্য এবং ধীর গতির ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্য মূলত 1.0451–1.0596 এর হরাইজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে অবস্থান করছে। দুই মাসের দরপতনের পরও মার্কেটে ইউরো ক্রয়ের উল্লেখযোগ্য আগ্রহ দেখা যায়নি।
আমরা আশা করছি যে বুধবার এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে, কারণ মূল্য আবারও 1.0596 লেভেল অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ 1.0526 লেভেলের নিচে দ্বিতীয়বার কনসলিডেশন হলে আরও দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896। বুধবার ইউরোজোনে উল্লেখযোগ্য কোনও অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক এবং পরবর্তী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য ফেডের বৈঠকের সিদ্ধান্তকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে। ট্রেডারদের এই প্রতিবেদনের দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত, কারণ এটি বাজার পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।