সোমবার দিনের প্রথমার্ধে, GBP/USD পেয়ারের দরপতনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যায়নি। রাতেই যখন ইউরোর দরপতন শুরু হয়, এটি পাউন্ডকে প্রভাবিত করেনি। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, ইউরো এবং পাউন্ড প্রায়শই শক্তিশালীভাবে পারস্পারিকভাবে সম্পর্কয্যক্ত। তাই, যদি হঠাৎ করে ইউরোর দরপতন শুরু হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আশা করা যায় যে পাউন্ডেরও দরপতন শুরু হবে। তবে, প্রত্যাশার তুলনায় অনেক ধীরগতিতে ব্রিটিশ মুদ্রার দরপতন হচ্ছে এবং এটির মূল্য ইউরোর তুলনায় বেশি আত্মবিশ্বাসের সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা বছরের শুরু থেকেই এটি লক্ষ্য করছি, এবং এখনো এই পরিস্থিতির তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি।
আগের মতোই, আমরা মনে করি যে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের (BoE) সিদ্ধান্তহীনতাই ব্রিটিশ মুদ্রার প্রধান সমর্থনকারী উপাদান। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ECB) এবং ফেডারেল রিজার্ভ (Fed) উভয়ই আরো দ্রুতগতিতে সুদের হার কমাচ্ছে, যেখানে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড এখনো সিদ্ধান্তহীন যে তারা মুদ্রাস্ফীতির ত্বরান্বিত হওয়া নিয়ে না কি দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। আমরা এমনকি বলবো যে এটি শুধু ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের সিদ্ধান্তহীনতাই নয়, বরং মার্কেটে এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে যে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পরবর্তীতে কী প্রত্যাশা করা উচিত। বাস্তবে, পাউন্ডের তুলনায় ডলারের শক্তিশালী হওয়া উচিত—এবং এটি হচ্ছে—তবে যেহেতু ইসিবি ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের চেয়ে আরো বেশি ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছে, তাই ধীরগতিতে পাউন্ডের দরপতন হচ্ছে।
তবে, আমরা মনে করি না যে এই ধরনের পরিস্থিতি চিরকাল স্থায়ী হবে। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড অবশেষে আরও সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। এমনকি যদি তা নাও হয় এবং তারা ক্রমাগত মুদ্রানীতি নমনীয়করণের পথ গ্রহণ করে, তবুও পাউন্ড দীর্ঘ সময় ধরে চাপের মধ্যে থাকবে—কম তীব্র কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী। কোন না কোনভাবে, সম্ভবত পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত থাকবে।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে এমন কোনো কারণ খুঁজছি যা ডলারের দীর্ঘমেয়াদী দরপতন বা ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধিকে ন্যায্যতা দিতে পারে—এবং এমন কোনো কারণ খুঁজে পাইনি। বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত চিত্র উপেক্ষা করলেও, যেখানে ১৬ বছরের দীর্ঘ নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো শেষ হয়নি, মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ খুঁজে পাওয়া চ্যালেঞ্জিং যা এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধিকে সমর্থন করবে। আমরা মনে করি যে পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্য গত দুই বছর ধরে কারেকশন প্রদর্শন করছে এবং এটি প্রায় ৫০% বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সুতরাং, আমরা মনে করি যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকা উচিত।
অবশ্যই, ফরেক্স মার্কেট সবসময় প্রত্যাশা অনুযায়ী চলে না। মনে রাখতে হবে যে মার্কেটের মুভমেন্ট মার্কেট মেকারদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, যারা যেকোনো দিকে যেকোনো মুদ্রার মূল্যের মুভমেন্ট ঘটাতে পারে। তদ্ব্যতীত, কিছু মার্কেট মেকার বিনিময় হারের পার্থক্য থেকে লাভ করা-কে তাদের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে দেখেন না। ফলে, মাঝে মাঝে আমরা এমন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মুভমেন্ট দেখতে পাই যা বর্তমান মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণের সাথে সম্পর্কিত নয়। এই ধরনের সময়কালের পূর্বাভাস দেওয়াও অসম্ভব, তাই পরিস্থিতি যতই স্পষ্ট মনে হোক না কেন, এটি মনে রাখা জরুরি যে পরিস্থিতি সবসময় অপ্রত্যাশিত মোড় নিতে পারে।
গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে 96 পিপস, যা এই পেয়ারের জন্য "গড়পরতা" হিসেবে বিবেচিত হয়। ৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবারে আমরা আশা করছি যে এই পেয়ারের মূল্য 1.2551 এবং 1.2743 লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেলটি নিম্নমুখী হচ্ছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়। CCI সূচকটি কয়েকটি বুলিশ ডাইভারজেন্স তৈরি করেছে এবং একাধিকবার ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে। একটি কারেকশন শুরু হয়েছে, তবে এর স্থায়িত্বের ব্যাপারে পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেলS1 – 1.2573S2 – 1.2451নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেলR1 – 1.2695R2 – 1.2817R3 – 1.2939ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। আমরা এখনো লং পজিশন বিবেচনা করছি না, কারণ আমরা মনে করি যে মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যেই ব্রিটিশ মুদ্রার সম্ভাব্য দর বৃদ্ধির সকল কারণ একাধিকবার মূল্যায়ন করেছে। যারা "শুধু টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস" ব্যবহার করে ট্রেড করেন, তারা মূল্য মুভিং অ্যাভারেজ লাইনের উপরে থাকলে 1.2817 এবং 1.2939 এর লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন বিবেচনা করতে পারেন। তবে, শর্ট পজিশন এখন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, বিশেষত যদি মূল্য আবার মুভিং অ্যাভারেজের নিচে কনসলিডেট করে। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে 1.2451 এর লেভেল।
চিত্রের ব্যাখা:লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।