বুধবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ার ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে ট্রেডিং চালিয়ে গেছে। তবে EUR/USD-এর তুলনায় GBP/USD-এর ফ্ল্যাট রেঞ্জ বেশ সুনির্দিষ্ট, যেখানে স্পষ্ট সীমারেখা বিদ্যমান। গত সপ্তাহে 1.2605–1.2620 এবং 1.2691–1.2701 রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্য ওঠানামা করেছে। এই পেয়ারের মূল্য ধারাবাহিকভাবে এই রেঞ্জগুলোর উপরের বা নিচের সীমায় পৌছাচ্ছে, যা ট্রেডারদেরকে সম্ভাব্য এন্ট্রি পয়েন্ট প্রদান করেছে। তবে, লক্ষণীয় বিষয় হলো ফ্ল্যাট মার্কেটে ইচিমোকু লাইনগুলোর শক্তি কমে যায়।
বুধবারের একমাত্র উল্লেখযোগ্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন হিসেবে যুক্তরাজ্যের কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ফলাফল অনুযায়ী দেশটির বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি হার বৃদ্ধি পেয়ে 2.3%-এ পৌঁছেছে, যা পূর্বাভাসের তুলনায় সামান্য বেশি। কোর ইনফ্লেশন বা মূল মুদ্রাস্ফীতিও বেড়ে 3.3%-এ পৌঁছেছে, যেখানে পূর্বাভাস ছিল এই সূচক 3.1%-এ হ্রাস পাবে। এটি ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলির মুদ্রাস্ফীতির গতি বৃদ্ধি বিষয়ক উদ্বেগকে নিশ্চিত করে। ফলস্বরূপ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সম্ভবত আরও ধীর গতিতে সুদের হার কমাবে, যা পাউন্ড স্টার্লিংয়ের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত।
তবে, বুধবার এটি আবার প্রমাণিত হয়েছে যে অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফল প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে ব্যর্থ হতে পারে। দৃঢ় বৃদ্ধির মজবুত ভিত্তি থাকা সত্ত্বেও, এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট চ্যানেলের উপরের সীমা অতিক্রম করতে পারেনি, এমনকি মূল্য ফ্ল্যাট উপরের সীমার কাছাকাছি অবস্থান করলেও তা অতিক্রম করতে পারে। এটি একটি কারেকশনের অংশ হিসেবে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির পরিবর্তে মাঝারি-মেয়াদে স্থায়ী দরপতনের সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করে।
মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পর, এই পেয়ারের মূল্য 1.2691–1.2701 রেঞ্জ অতিক্রম করে কিছু ট্রেডিং সিগন্যাল গঠন করেছিল। তবে, এই সিগন্যালগুলো ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এক ঘণ্টার মধ্যে মূল্য এই রেঞ্জের নিচে নেমে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে একটি সঠিক সিগন্যাল গঠন করে। এর ফলে এই পেয়ারের মূল্য 40 পিপস কমে যায়। তবে, এই পেয়ারের মূল্যের বুধবারের মুভমেন্ট সহজে পূর্বাভাসযোগ্য ছিল না এবং এতে কোন ধারাবাহিকতাও দেখা যায়নি।
COT রিপোর্টসর্বশেষ কমিটমেন্টস অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্ট অনুযায়ী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রিটিশ পাউন্ডের কমার্শিয়াল ট্রেডারদের সেন্টিমেন্ট অত্যন্ত অস্থির হিসেবে পরিলক্ষিত হয়েছে। লাল এবং নীল লাইন, যা কমার্শিয়াল এবং নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন প্রতিফলিত করে, প্রায়ই পরস্পরকে অতিক্রম করছে এবং শূন্যের কাছাকাছি রয়েছে। লাল লাইনটি শূন্যের নিচে থাকা অবস্থায় এই পেয়ারের মূল্যের সর্বশেষ নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। বর্তমানে, লাল লাইনটি শূন্যের উপরে রয়েছে।
সর্বশেষ COT রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল গ্রুপ 700টি বাই কন্ট্রাক্ট এবং 11,700টি সেল কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে। ফলস্বরূপ, সাপ্তাহিক ভিত্তিতে নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন 11,000 কন্ট্র্যাক্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও মার্কেটের ট্রেডাররা মাঝারি মেয়াদে পাউন্ড স্টার্লিং বিক্রি করার জন্য তাড়াহুড়ো করছে না তবে, গত ছয় সপ্তাহে পরিলক্ষিত এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট বেশ উৎসাহজনক।
মৌলিক পটভূমি এখনও দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ড ক্রয়ের জন্য কোন ভিত্তি প্রদান করছে না, এবং বিশ্বব্যাপী পাউন্ডের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার বাস্তবসম্মত সুযোগ রয়েছে। তবে, সাপ্তাহিক টাইম ফ্রেমে একটি অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন দেখা যাচ্ছে, তাই এই ট্রেন্ডলাইনটি ব্রেক না হওয়া পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ডের দরপতন প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না। আপাতত, ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্য স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করে চলেছে।
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্টের বিশ্লেষণঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। পূর্ববর্তী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাটি এখন অকার্যকর হয়ে গেছে, ফলে ব্রিটিশ মুদ্রার আরও দরপতন, বিশেষত তীব্র এবং দীর্ঘমেয়াদী দরপতনের সম্ভাবনাই এখন সবচেয়ে বেশি। সাম্প্রতিক কারেকশনটি একটি ফ্ল্যাট মুভমেন্টে পরিণত হয়েছিল এবং তা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। নতুন একটি কারেকশন শুরু হয়েছে যেখানে 1.2605–1.2620 এর জোন সাপোর্ট জোন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তবে সার্বিকভাবে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। পাউন্ড স্টার্লিংয়ের উল্লেখযোগ্য মূল্য বৃদ্ধির জন্য কোনো মৌলিক কারণ নেই, এবং যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনও পাউন্ডকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
২১ নভেম্বরের জন্য আমরা নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলোর উপর আলোকপাত করছি: 1.2429-1.2445, 1.2516, 1.2605-1.2620, 1.2796-1.2816, 1.2863, 1.2981-1.2987, 1.3050। সেনকৌ স্প্যান বি (1.2803) এবং কিজুন-সেন (1.2658) লাইনগুলোও সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারিত দিকে 20 পিপস মুভমেন্টের পর ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। মনে রাখবেন যে ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা ট্রেডিং সিগন্যাল সনাক্ত করার সময় বিবেচনা করা উচিত।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু, কেবলমাত্র কয়েকটি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। আজ উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটার সম্ভাবনা কম কারণ বুধবারের অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রভাবেও এই পেয়ারের মূল্য এই হরাইজন্টাল চ্যানেল ব্রেক করে বেরিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। এই পেয়ারের মূল্যের একই রেঞ্জের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা বেশি।
চার্টের সূচকসমূহের বর্ণনা:মূল্যের সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হচ্ছে গাঢ় লাল লাইন, যার কাছাকাছি মুভমেন্ট শেষ হতে পারে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল প্রদান করে না।
কিজুন-সেন এবং সেনকৌ স্প্যান বি লাইন হল ইচিমোকু সূচকের লাইন, যা 4-ঘন্টা থেকে এক ঘন্টার চার্টে সরানো হয়েছে। এগুলো শক্তিশালী লাইন।
এক্সট্রিম লেভেল হল হালকা লাল লাইন যেখান থেকে মূল্য আগে বাউন্স করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল প্রদান করে।
হলুদ লাইন হল ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্য কোন প্রযুক্তিগত নিদর্শন।
COT চার্টে সূচক 1 প্রতিটি শ্রেণীর ট্রেডারদের নেট পজিশনের আকার প্রতিফলিত করে।