১৮ নভেম্বর কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য সহজ পরামর্শ ও ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ

শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণEUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ার বৃহস্পতিবার গঠিত রেঞ্জের মধ্যে ট্রেডিং অব্যাহত রেখেছে। আবারও এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশনের করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আবারও ট্রেডাররা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউরোর মূল্য 1.0596 লেভেলের উপরে স্থিরভাবে অবস্থান গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে, মনে হচ্ছে এই পেয়ারের মূল্য কিছু সময় স্থিতিশীল থাকতে পারে, তারপর পুনরায় দরপতন শুরু হতে পারে। বর্তমানে, মার্কেটের ট্রেডারদের কাছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং মৌলিক পটভূমি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। অন্য কথায়, ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে এবং কোন প্রাসঙ্গিক সংবাদ বা প্রতিবেদন ছাড়াই ডলার বৃদ্ধি পেতে পারে। শুক্রবারের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত খুচরা বিক্রয় 0.4% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা 0.3% পূর্বাভাসের থেকে বেশি ছিল, যখন পূর্ববর্তী মাসে এই সূচক 0.4% থেকে 0.8%-এ পৌঁছেছিল। অন্যদিকে, মার্কিন শিল্প উৎপাদন 0.3% হ্রাস পেয়েছে, যা পূর্বাভাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, কিন্তু পূর্ববর্তী মাসে এই সূচক -0.3% থেকে -0.5%-এ নেমে গিয়েছিল। তবে, খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদনের প্রভাব শিল্প উৎপাদনের প্রভাবকে ছাড়িয়ে গেছে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

5-মিনিটের চার্টে, শুক্রবার দুটি প্রায় নিখুঁত ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.0596 লেভেল থেকে কিছুটা রিবাউন্ড করে এবং পরে 1.0526 এর লেভেলের টেস্ট হয় এবং আবার রিবাউন্ড করে। নতুন ট্রেডাররা প্রথমে শর্ট পজিশন এবং পরে লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন। একই সময়ে, লং ট্রেড থেকে তেমন মুনাফা পাওয়া যায়নি, কিন্তু শর্ট পজিশন থেকে প্রায় 20-30 পিপস লাভ হয়েছিল।

সোমবারে ট্রেডিংয়ের কৌশল:

ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, আবারও EUR/USD পেয়ারের কারেকশনের প্রচেষ্টা চালানো হতে পারে। তবে, মার্কেটে ইউরো ক্রয়ের বা শর্ট পজিশন থেকে মুনাফা নেওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি শীঘ্রই এটি ঘটে, আমরা মনে করি যে নতুন কারেকশনের সম্ভবত দুর্বল হবে এবং ইউরোর জন্য সমর্থনমূলক প্রতিবেদনের প্রয়োজন হবে। এমনকি সেক্ষেত্রেও, মার্কেটের ট্রেডাররা বর্তমানে মার্কিন ডলার ক্রয় করছে।

সোমবার, আমরা দরপতন অব্যাহত থাকার আশা করছি, বিশেষ করে গত সপ্তাহে পাওয়েলের হকিশ মন্তব্যের পরে এবং 1.0596 লেভেলের উপরে ইউরোর মূল্যের অবস্থান গ্রহণ করতে না পারা সাপেক্ষে।

আজ ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করুন: 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0951। সোমবারের জন্য একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হল ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দের বক্তব্য। তবে, ইসিবির কাছ সাম্প্রতিক হকিশ সংকেতের পর, লাগার্ডে ইউরোর জন্য তেমন কোন সমর্থন প্রদান করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।

2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।

3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।

4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।

5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।

6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।

চার্টে কী কী আছে:

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।

লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।

MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।

নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।