GBP/USD পেয়ারের সাপ্তাহিক পর্যালোচনা; মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন ডলারের ভাগ্য নির্ধারণ করবে

শুক্রবারে GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল, যদিও কোন গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোন প্রভাবশালী মৌলিক প্রেক্ষাপটও ছিল না। ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের কারণগুলো অনেকটা ইউরোর সাথে মিলে যায়। যেমনটি আমরা আগেই বলেছি, FOMC-এর বৈঠকের পরপরই কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উচিত নয় বরং কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা পরে এটি নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা উচিত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা কী দেখেছি? মার্কেটে প্রায় কোনই কার্যকলাপ ছিলনা—কেবলমাত্র ডলারের সামান্য দরপতন হয়েছে এবং ট্রেডারদের মধ্যে ট্রেড করার আগ্রহের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে, শুক্রবারে ডলারের দর ৭০ পিপস বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাউন্ডের মূল্য বেশিরভাগ সময় স্থবির ছিল, এটি বৃহত্তর মাত্রায় পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটায়নি। মূল বিষয়টি হলো, ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের পরে মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে ডলার ক্রয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। পাউন্ড স্টার্লিং উল্লেখযোগ্যভাবে কারেকশন করতে সংগ্রাম করেছে। আমরা এই দুটি বিষয়কে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করি।

পরবর্তী পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। সুতরাং, এই দুটি দেশের প্রতি সব মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হয়েছে। আসুন যুক্তরাজ্য দিয়ে শুরু করি। মঙ্গলবারে, যুক্তরাজ্যের বেকারত্বের হার, জবলেস ক্লেইমসের সংখ্যা এবং মজুরি বৃদ্ধির উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও এগুলো বেশ উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন, তবে এটি বিশ্বব্যাপী ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্যের উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। শুক্রবারে, যুক্তরাজ্যে তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনের প্রাথমিক পূর্বাভাস এবং সেপ্টেম্বর মাসের শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলো মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি সম্ভবত মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনগুলোর চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে না। মূল্যস্ফীতি পরিসংখ্যান এখনও ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে। সুতরাং, যুক্তরাজ্যের প্রতিবেদনের ফলাফল পাউন্ডের মূল্যকে দৈনিক ভিত্তিতে প্রভাবিত করতে পারে তবে এর বেশি কিছু নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, মূলত অক্টোবর মাসের কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) বা ভোক্তা মূল্য সূচকের উপর দৃষ্টি থাকবে, যা মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বারবার উল্লেখ করেছেন যে, নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আসন্ন প্রতিবেদনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যদি মূল্যস্ফীতি পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়, তাহলে ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসবে। এটি মার্কিন ডলারের জন্য চমৎকার খবর, যা ফেডের অতিমাত্রায় নমনীয় নীতিমালা প্রণয়নের সম্ভাবনাটি ট্রেডাররা ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছে বলে প্রমাণ করবে।

মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি, উৎপাদক মূল্য সূচক, জবলেস ক্লেইমস, পাওয়েলের ভাষণ, খুচরা বিক্রয় এবং শিল্প উৎপাদনও উল্লেখযোগ্য। যদিও এই প্রতিবেদনগুলো দৈনিক ভিত্তিএ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, CPI বা ভোক্তা মূল্য সূচকের প্রতিবেদন ও পাওয়েলের পরবর্তী ভাষণ ফেডের ডিসেম্বর মাসের পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করতে পারে। যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, তাহলে ডলারের মূল্য আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে 122 পিপস, যা এই পেয়ারের জন্য "উচ্চমাত্রার" হিসাবে বিবেচিত হয়। সোমবার, ১১ নভেম্বর, আমরা আশা করছি যে এই পেয়ারের মূল্য 1.2794 এবং 1.3038 এর লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল নিম্নমুখী হয়েছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতার সম্ভাবনা নির্দেশ করে। CCI সূচকটি বুলিশ ডাইভারজেন্স গঠন করেছে, তবে এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশন ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে এবং পেয়ারটির মূল্য এখন একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জে রয়েছে।

নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:

S1: 1.2909

S2: 1.2878

S3: 1.2848

নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:

R1: 1.2939

R2: 1.2970

R3: 1.3000

ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

এখনও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা বজায় রয়েছে। আমরা এখনও লং পজিশন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি না, কারণ মার্কেটের টেডাররা পাউন্ডের মূল্যের সম্ভাব্য বুলিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কারণগুলো একাধিকবার মূল্যায়ন করেছে। যারা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে ট্রেড করেন, তারা লং পজিশন ওপেন করতে পারেন যার লক্ষ্যমাত্রা 1.3000 এবং 1.3031 হতে পারে, তবে শুধুমাত্র তখনই লং পজিশন ওপেন করা উচিত হবে যখন মূল্য মুভিং এভারেজের উপরে চলে যাবে। যতক্ষণ মূল্য মুভিং এভারেজের নিচে থাকে, শর্ট পজিশন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক থাকবে, যার লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.2848 এবং 1.2817 এর লেভেল।

চিত্রের ব্যাখা:লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।