শুক্রবারেও EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হয়েছে। বলা যেতে পারে, "ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট বেশিক্ষণ অব্যাহত থাকল না।" ইউরোর মূল্য মাত্র দেড় দিনের জন্য ঊর্ধ্বমুখী ছিল, এরপর আবার নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। শুক্রবারে ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তবে সপ্তাহের শুরুতে ক্রিস্টিন লাগার্ডের মন্তব্যকেই ইউরোর ধারাবাহিক দরপতনের কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। তবে, আমরা মনে করি, লাগার্ডের মন্তব্যের প্রভাব ছাড়াও ইউরোর দরপতন হওয়া উচিত ছিল, কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যেই ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতির নমনীয়করণের বিষয়টিকে মূল্যায়ন করেছে এবং এখন সময় এসেছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির নমনীয়করণের বিষয়টি মূল্যায়নের, যা ট্রেডারদের প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত করা হচ্ছে।
এছাড়াও, ইসিবির সুদের হার এমনকি "নিরপেক্ষ স্তর" এর নিচেও কমানো হতে পারে, যেরকমটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন প্রতিনিধিরা ইঙ্গিত দিয়েছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইউরোর দরপতনের জন্য প্রচুর কারণ রয়েছে, বিশেষ করে যখন গত দুই বছর ধরে এটির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি মূল্য ট্রেন্ডলাইন অতিক্রম করার পরেও কোনো শক্তিশালী কারেকশন দেখা যায়নি। পূর্বের মতোই, আমরা এই পেয়ারের দরপতনের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি, কারণ যেকোনো কারেকশনের ফলে কেবল নতুন করে এই পেয়ার বিক্রির জন্য একটি ভালো সুযোগ পাওয়া যাবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টশুক্রবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। এই পেয়ারের মূল্য প্রায় 1.0845-1.0851 এর রেজিস্ট্যান্স এরিয়া স্পর্শ করেই 1.0792-1.0804 এর এরিয়ায় নেমে আসে। গত সপ্তাহ এবং দৈনিক ট্রেডিংয়ের শেষে এই ক্রয় বা বিক্রয়ের জন্য এন্ট্রি করা উপযুক্ত মনে হয়নি।
সোমবারে কীভাবে ট্রেড করতে হবে:এক ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের এক মাসের নিম্নমুখী মুভমেন্টের পর কারেকশন শুরু হতে পারে। ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য কমপক্ষে কিছু ভিত্তি রয়েছে। আমরা মনে করি যে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন শুরু হতে পারে, যদিও এটি শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং এর জন্য ইউরোকে সহায়তা করতে পারে এমন কিছু প্রতিবেদন বা ইভেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। মধ্যমেয়াদে, আমরা এখনও এই পেয়ারের আরও মূল্যপতনের প্রত্যাশা করছি।
সোমবারে, নতুন ট্রেডাররা আবার 1.0792-1.0804 এর এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারেন। যদি এই লেভেলটি ব্রেকআউট করে মূল্য নিম্নমুখী হয়, তবে এটি নতুন করে এই পেয়ার বিক্রির জন্য একটি চমৎকার সুযোগ হবে। তবে, মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে গেছে, তাই অন্তত আরও একটি ঊর্ধ্বমুখী কারেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করতে পারেন: 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0951, 1.1011, 1.1048, 1.1091, এবং 1.1132-1.1140। সোমবারে, ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা আবারও কম থাকতে পারে এবং অন্তত আরেক দফায় ইউরোর মূল্যের কারেকশনের চেষ্টা করা হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।