মঙ্গলবারও নিম্নমুখী প্রবণতায় EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং অব্যাহত রয়েছে। মূল্য এখনও ট্রেন্ড লাইনের নিচে রয়েছে এবং কারেকশন শুরু করার জন্য মূল্যের উপরে উঠার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন একই চিত্র দেখা যাচ্ছে— ধীরে ধীরে কিন্তু স্থিতিশীলভাবে ইউরোর দরপতন হচ্ছে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, এই ধরনের পরিস্থিতি অবাক করার মতো নয়, কারণ ইউরোর মূল্য ডলারের বিপরীতে অনেক বেশি এবং দীর্ঘ সময় ধরে বৃদ্ধি পেয়েছিল। মার্কেটের ট্রেডারদের দৃষ্টি ফেডারেল রিজার্ভ থেকে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে স্থানান্তরিত হয়েছে, কারণ ফেডের মুদ্রানীতি নমনীয় করার বিষয়টি ট্রেডাররা ইতোমধ্যেই মূল্যায়ন করেছে।
এদিকে, ইসিবি কেবল মুদ্রানীতিই নমনীয় করছে না, বরং তারা মূল সুদের হারের হ্রাসের গতি ত্বরান্বিত করেছে। গতকাল ক্রিস্টিন লাগার্ড নিশ্চিত করেছেন যে ইসিবি সুদের হার কমানোর নীতিতে অব্যাহত থাকবে, এবং তিনি আসন্ন কোনো বৈঠকে 0.5% সুদের হার কমানোর সম্ভাবনাও বাতিল করেননি। এই সমস্ত তথ্য, স্বাভাবিকভাবেই, ইউরোর বিপক্ষে কাজ করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টমঙ্গলবার ৫-মিনিটের টাইম ফ্রেমে কোনো সিগন্যাল গঠিত হয়নি। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ার বিক্রির ভালো সুযোগ ছিল, কিন্তু মূল্য 1.0845-1.0851 এরিয়ায় পৌঁছানোর আগেই মুভমেন্ট থেমে যায়, যেখান থেকে শর্ট পজিশন ওপেন করা যৌক্তিক ছিল। দিনের শেষে মূল্য 1.0797-1.0804 এরিয়ায় নেমে আসে, তবে কোনো স্পষ্ট বাই সিগন্যাল গঠিত হয়নি। এই মুহূর্তে মূলত এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তাই বাই সিগন্যালগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত নয়।
বুধবারে কীভাবে ট্রেড করতে হবে:এক ঘন্টার টাইম ফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নতুন নিম্নমুখী প্রবণতার গঠনের প্রথম ধাপ দেখা যাচ্ছে। এখন, এই ধাপটিকে অনেকটা একটি লাফের মতো মনে হচ্ছে। শীঘ্রই এই পেয়ারের মূল্যের একটি কারেকশন শুরু হতে পারে, তবে কারেকশনের কোনো সংকেত এখনও দেখা যায়নি। কারেকশন ছাড়াই ইউরোর আরও দরপতনের আশা করা যায়, কারণ এটি এখনও অত্যন্ত বেশি ক্রয় করা হয়েছে, যদিও একটি কারেকশন মার্কেটকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করতে পারে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা ট্রেন্ড লাইন এবং 1.0797-1.0804 এর লেভেল থেকে ট্রেড করতে পারেন। শর্ট পজিশন বর্তমানে অনেক বেশি সুবিধাজনক বলে মনে হচ্ছে।
৫-মিনিটের টাইম ফ্রেমে, ট্রেড করার জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0951, 1.1011, 1.1048, 1.1091, এবং 1.1132-1.1140। বুধবার ইউরোজোনে লাগার্ডের আরেকটি বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি গৌণ গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। মূলত, আজ লাগার্ড নতুন কিছু ঘোষণা করবেন না বলেই ধরে নেওয়া যায়, তাই আজ কোনো গুরুত্বপূর্ণ খবরের আশা করা হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।