১৬ অক্টোবর কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য সহজ পরামর্শ ও ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ

মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণEUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

মঙ্গলবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে। পুরো দিনে ইউরোজোনের শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত একটি মাত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যেটির ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল। যদিও এর মাধ্যমে ইউরোর শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু এর পরিবর্তে আমরা এই পেয়ারের আরও দরপতন লক্ষ্য করেছি। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি বেশ যৌক্তিক। ইউরোর মূল্য অনেক দিন ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা দীর্ঘ সময় ধরে ইউরোর জন্য নেতিবাচক সকল কারণ উপেক্ষা করেছে। মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রেও এটি প্রকৃত মানের চেয়ে অনেক কম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণেই আমরা এখন কারেকশন ছাড়াই তিন সপ্তাহ ধরে এই পেয়ারের দরপতন লক্ষ্য করছি। সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে এর তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। আগামীকাল, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৃতীয়বারের মতো সুদের হার কমাতে পারে। ফলে ইউরোর আরও দরপতন হতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনটি বিদ্যমান রয়েছে, তবে যদি মূল্য এটি অতিক্রম করে উপরের দিকে যেতে না পারলে ঊর্ধ্বমুখী কারেকশনের আশা করার কোনো কারণ থাকবে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

মঙ্গলবার, 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি মাত্র বাই সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা আবারও খুবই কম ছিল এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সুতরাং, তিন সপ্তাহ ধরে এই পেয়ারের দরপতন হওয়ার পর বাই পজিশন ওপেন করার আগে অনেকবার ভাবা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে। আজ, যদি মূল্য 1.0888-1.0896 এরিয়ার নিচে স্থির হয়, তবে এই পেয়ার বিক্রি করা সবচেয়ে যৌক্তিক বিকল্প হবে, কারণ এখন শর্ট পজিশন সবচেয়ে যৌক্তিক বিকল্প।

বুধবারে কীভাবে ট্রেড করতে হবে:

প্রতি ঘণ্টার চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার দিকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, মধ্যমেয়াদে আবার অযৌক্তিকভাবে ডলারের বিক্রি শুরু হতে পারে, কেননা কেউ জানে না মার্কেটের ট্রেডাররা কতক্ষণ ফেডের আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ দ্বারা প্রভাবিত হতে থাকবে। যাইহোক, আপাতত প্রতি ঘন্টার টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে। কারেকশন ছাড়াই ইউরোর আরও দরপতন আশা করা যেতে পারে, কারণ এটি এখনও ওভারসোল্ড স্ট্যাটাসে রয়েছে। তবে, এই পেয়ারের মূল্যের একটি কারেকশন চার্টটিকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলতে পারে।

বুধবার, 1.0888-1.0896 এরিয়ার উপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করা যেতে পারে। আবারও এই পেয়ারের মূল্যের খুব দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, তাই বেশি লাভের আশা করা উচিত নয়।

5 মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0951, 1.1011, 1.1048, 1.1091, 1.1132-1.1140, এবং 1.1189-1.1191। বুধবার, একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হিসেবে ইসিবির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিতব্য বক্তব্য রয়েছে। তবে, যেহেতু আগামীকাল ইসিবির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তাই লাগার্ড আজ তেমন কিছু জানাবেন বলে মনে হচ্ছে না।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।

চার্টে কী কী আছে:

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।

লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।

MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।

নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।