২৭ সেপ্টেম্বর কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য সহজ পরামর্শ ও ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ

বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

বৃহস্পতিবার আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে EUR/USD পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে। আমাদের প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। দেশটিতে প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল, কিন্তু প্রথম প্রান্তিকের ফলাফলের তুলনায় এই সূচকটি +1.6% উর্ধ্বমুখী হয়েছে। এটিকে কি ইতিবাচক ফলাফল হিসেবে বিবেচনা যায়? হ্যাঁ, তা যায়। এর পরে, টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের আগস্টের ফলাফল প্রত্যাশা অতিক্রম করেছে, যা প্রত্যাশিত -2.6% এর বিপরীতে 0.0% এ পৌঁছেছে। জবলেস ক্লেইমস সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফলও ট্রেডারদের প্রত্যাশার তুলনায় ইতিবাচক হয়েছে। সুতরাং, তিনটির মধ্যে তিনটি প্রতিবেদনের ফলাফলই ট্রেডারদের প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল। ডলারের দাম কত বেড়েছে? 35 পিপস। এবং তারপরে এটি 65 পিপস দরপতনের শিকার হয়েছে। হ্যাঁ, এই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের পর ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তৃতা দিয়েছিল, এবং ট্রেডাররা নিশ্চিতভাবে বাজার এই বক্তব্য থেকে ফেডের ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের সংকেত খুঁজে পেয়েছিল। কিন্তু আমরা যদি পাওয়েলের বক্তৃতা উপেক্ষা করি, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফলের প্রভাবে ডলারের মূল্য মাত্র 35 পিপস বেড়েছে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

বৃহস্পতিবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি বাই সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। মূল্য 1.1132-1.1140 এরিয়া থেকে দুবার বাউন্স করেছে, যা ব্যবহার করে নতুন ট্রেডাররা দুটি লং পজিশন ওপেন করতে পারে। প্রথম ক্ষেত্রে, এই পেয়ারের মূল্য মাত্র 15 পিপ বেড়েছে, যা ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার জন্য যথেষ্ট ছিল, যেখানে শেষ পর্যন্ত ট্রেড ক্লোজ হয়ে গিয়েছিল। এই পেয়ারের মূল্যের দ্বিতীয়বারের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শক্তিশালী ছিল, এবং মূল্য 1.1189-1.1191 এর নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। এই ট্রেডটি থেকে প্রায় 30-35 পিপস লাভ করা গিয়েছিল।

শুক্রবারে কীভাবে ট্রেড করতে হবে:

প্রতি ঘণ্টার চার্টে, এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, মার্কেটে মাঝারি মেয়াদে সহজেই অযৌক্তিকভাবে ডলারের বিক্রি চলমান থাকতে পারে, কারণ কেউ জানে না যে ট্রেডাররা কতক্ষণ ফেডের আর্থিক নীতিমালা নমনীয়করণের ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করবে এবং ইসিবির আর্থিক নীতিমালা নমনীয়করণের বিষয়টি উপেক্ষা করবে। যাইহোক, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে, এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে মার্কেটের ট্রেডারদের এই পেয়ারের মূল্যকে আরও ঊর্ধ্বমুখী করাকে কঠিন বলে মনে করছে। সম্ভবত এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সমাপ্তির কাছাকাছি রয়েছে, কিন্তু আগামী সপ্তাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যা পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে।

শুক্রবার, যদি মূল্য 1.1189-1.1191 এরিয়ায় বাউন্স করে তাহলে নতুন করে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হতে পারে। মূল্য এই এরিয়া অতিক্রম করলে, ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে, এবং দৈনিক ভিত্তিতে লং পজিশন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।

5 মিনিটের টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971, 1.1011, 1.1048, 1.1091, 1.1132-1.1140, 1.1189-1.1191, 1.1275-1.1292। শুক্রবার ইউরোজোনে কোন উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই ইউরোপীয় সেশন চলাকালীন সময়ে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট লক্ষ্য করা যেতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ পিসিই সূচক এবং কনজিউমার সেন্টিমেন্ট সূচক প্রকাশিত হবে।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।

2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।

3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।

4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।

5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।

6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।

চার্টে কী আছে:

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।

লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।

MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।

নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।