৬ সেপ্টেম্বর কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য সহজ পরামর্শ ও লেনদেনের বিশ্লেষণ

বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী গতিশীলতা বজায় ছিল। এই মুভমেন্ট দুর্বল, অনিশ্চিত এবং কারেকটিভ ছিল, কিন্তু তারপরও এই পেয়ারের মূল্য বেড়েছে। মনে রাখবেন যে ২৬ আগস্টের পরে এই পেয়ারের মূল্যের সমস্ত মুভমেন্টকে একটি দুর্বল কারেকশন হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। ফলে, বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টকে সাম্প্রতিক সপ্তাহ এবং মাসগুলোতে প্রতীয়মান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার একটি নতুন পর্বের সূচনার মত দেখাচ্ছে। এই সপ্তাহে, মার্কিন ডলার সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি থেকে সমর্থন পাওয়ার আশা করেছিল, কিন্তু মঙ্গলবারের প্রথম দিকে এই আশা ম্লান হতে শুরু করে। প্রথমত, ISM থেকে প্রকাশিত উৎপাদন সংক্রান্ত ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকের ফলাফল যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল না, এবং তারপর JOLTS থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় দুর্বল ছিল। তারপরে, ADP থেকে প্রকাশিত শ্রম বাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে রেকর্ড সর্বনিম্ন ছিল। অতএব, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির আশা করা হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শুধুমাত্র হতাশাজনক ফলাফল দেখা গেলে ডলারের মূল্য কীভাবে বাড়তে পারে? আমরা উল্লেখ করেছি যে মার্কিন মুদ্রার মূল্য অবাধে 18 ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং এক বা দুই মাস পরে হ্রাস পেতে পারে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

বৃহস্পতিবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল, তবে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা দুর্বল ছিল। মার্কিন ট্রেডিং সেশনে প্রকাশিত ADP প্রতিবেদনের বিপর্যয়কর ফলাফল এবং ISM পরিষেবা সংক্রান্ত ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকের ইতিবাচক ফলাফল দেখা গেছে। এ কারণেই প্রথম দিকে ডলারের দরপতন হয়েছে, তারপর এটির মূল্য বেড়েছে এবং আবার দরপতনের শিকার হয়েছে। আজ, ট্রেডারদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে কারণ নন-ফার্ম পেরোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যা মার্কেটে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মার্কেটে রিভার্সাল, ফলস সিগন্যাল, এবং বর্ধিত অস্থিরতার সম্ভাবনা রয়েছে।

শুক্রবারে কীভাবে ট্রেড করতে হবে:

প্রতি ঘণ্টার চার্টে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইনের নিচে স্থির হয়েছে এবং দীর্ঘ সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠন করার সুযোগ রয়েছে যা যৌক্তিক এবং সমস্ত কারণ ও বিশ্লেষণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। দুর্ভাগ্যবশত, নিম্নমুখী কারেকশনের পরে পুনরায় অযৌক্তিকভাবে ডলার বিক্রি করা শুরু হতে পারে, কারণ কেউ জানে না যে মার্কেটে কতক্ষণ ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি নমনীয়করণের প্রভাবের ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারণ অব্যাহত থাকবে, যা এখনও শুরু হয়নি। যাইহোক, মার্কেটের ট্রেডাররা ফেডের প্রায় সবগুলো ভবিষ্যত সুদের হার কমানোর ভিত্তিতে ডলারের মূল্য হ্রাস অব্যাহত রেখেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল ইতিবাচকের চেয়ে প্রায়ই হতাশাজনক হচ্ছে।

শুক্রবার, নতুন ট্রেডাররা যে কোনও দিকে এবং যেকোন মাত্রার মুভমেন্টের আশা করতে পারেন। এই বিষয়ে কোন নিশ্চয়তা নেই যে মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল হতাশাজনক হবে, তাই ডলারের দর বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা রয়েছে।

5M টাইম ফ্রেমের মূল লেভেলগুলো হল 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971, 1.1011, 1.1048, 1.1091, 1.1132, 1.1191, এবং 1.1275-1.1292। শুক্রবার, ইউরোজোনে দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপির তৃতীয় মূল্যায়ন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, নন-ফার্ম পেরোল এবং বেকারত্বের হার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

1) সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।

2) যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।

3) ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।

4) ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।

5) প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।

6) যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

7) মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।

চার্টে কী আছে:

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।

লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।

MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।

নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।