মঙ্গলবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের তীক্ষ্ণ এবং অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। গতকালের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়াকে একটি পাঠ্যপুস্তকের অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে যার শিরোনাম হতে পারে "কীভাবে মার্কেটের ট্রেডিং কার্যক্রম নির্দিষ্ট দিকের দিকে পক্ষপাতমূলক হয়।" মূলত, মার্কিন প্রডিউসার প্রাইস ইনডেক্স (পিপিআই) বা উৎপাদক মূল্য সূচকের ফলাফল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সূত্রপাত করেছে। এই সূচকটি বার্ষিক ভিত্তিতে পূর্বাভাসের চেয়ে 0.1%-এর বেশি হ্রাস পেয়েছে এবং মাসিক ভিত্তিতে পূর্বাভাসের চেয়ে 0.1%-এর কম ছিল। মার্কেটের ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনটিকে অবিলম্বে ডলার বিক্রি করার সিগন্যাল হিসাবে ব্যাখ্যা করেছে, কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি সূচক পতনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বর্তমানে, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির যেকোন হ্রাস ডলারের দরপতন ঘটাতে পারে কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা সাত মাস ধরে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা এই ধরনের নিয়মিত প্রতিবেদনের প্রভাবে এত শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করিনি, কিন্তু আবারও, মার্কেটের ট্রেডাররা সেপ্টেম্বরে ফেডের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার ন্যায্যতা প্রমাণ করার জন্য যেকোনো আনুষ্ঠানিক কারণ ব্যবহার করার জন্য তাদের প্রস্তুতি প্রদর্শন করেছে। তবুও, EUR/USD পেয়ারের মূল্য 1.0600–1.1000 এর হরিজন্টাল চ্যানেলের মধ্যেই রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টমঙ্গলবার, 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল এবং বেশ অনুকূল মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। 1.0940 লেভেলের আশেপাশে প্রথম সেল সিগন্যালটি ভুল ছিল, কিন্তু মূল্য নির্ধারিত দিকে 15 পিপসের বেশি যাওয়ায় এই ট্রেডটি ব্রেকইভেনে ক্লোজ হয়ে যেতে পারে। তারপরে, 1.0940 এর একই লেভেলের কাছাকাছি একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যা মুনাফা নিয়ে এসেছিল। পরবর্তীতে মূল্য 10ম লেভেলে পৌঁছেছে, যেখানে ম্যানুয়ালি ট্রেড ক্লোজ করে মুনাফা অর্জন করা যেতে পারে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:প্রতি ঘণ্টার চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের স্বল্প-মেয়াদী নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়েছে কিন্তু মূল্য 1.10 লেভেলের উপরে উঠতে পারেনি। আমরা মনে করি যে ইউরোর ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে এমন সব কারণগুলো সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগিয়েছে, তাই আমরা দৃঢ় ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের আশা করছি না। 24-ঘণ্টার টাইম ফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য 1.06-1.10 এর ফ্ল্যাট রেঞ্জে রয়েছে। যাইহোক, মার্কেটে এই ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি পতনের যেকোন ইঙ্গিত পেলে ট্রেডাররা আতংকিত হয়ে ডলার বিক্রয় করে। আজ মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
বুধবার, নতুন ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করতে পারে কারণ মূল্য আবার 1.0600-1.1000-এর হরিজন্টাল চ্যানেলের উপরের সীমানার কাছাকাছি রয়েছে। যাইহোক, আজকের মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল সহজেই নতুন করে ডলারের দরপতন শুরু করতে পারে।
5M টাইম ফ্রেমে বিবেচনা করার মতো মূল লেভেলগুলো হল 1.0526, 1.0568, 1.0611, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0838–1.0856, 1.0888–1.0896, 1.0940, 1.0971, 1.1011, 1.1043, এবং 1.1091। বুধবার, ইউরোজোনে দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপির প্রতিবেদন এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। যাইহোক, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের তুলনায় এই প্রতিবেদনগুলোকে গুরুত্বের দিক থেকে গৌণ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:1) সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী আছে:সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।