আজ সকালে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দর আবার 144 থেকে 148-এ নেমে এসেছে। ব্যাংক অফ জাপানের গভর্নরের মন্তব্যে মার্কেটে চলমান অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট অস্বস্তির কথা উঠে আসায় এই ধরণের পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা ইয়েনের আরও শক্তিশালীকরণের সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। বিশ্ব বাজারে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রতিক্রিয়ায় ডেপুটি গভর্নর শিনিচি উচিদার মন্তব্যে ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের শক্তিশালী ইঙ্গিত পাওয়ার পরে ইয়েনের দাম কমেছে।
লক্ষণীয়ভাবে, এই প্রান্তিকে ইয়েনের দর ইতোমধ্যেই প্রায় 10% অগ্রসর হয়েছে, ট্রেডারদের ক্যারি ট্রেডের পজিশন হ্রাস করতে এবং জাপানি স্টক এবং বন্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বাধ্য করছে। 31 জুলাই জাপানী কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর পর থেকে উচিদার মন্তব্য ছিল ব্যাংক অফ জাপানের বোর্ড সদস্যের প্রথম বিবৃতি। দেশটির সুদের হার বৃদ্ধি মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইতোমধ্যে ইয়েনের মূল্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিকে উসকে দিয়েছে।
বর্তমানে, উচিদার মন্তব্য জাপানের স্টক মার্কেটে কিছুটা স্থিতিশীলতা আনতে পারে, তবে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল এবং মন্দার আশঙ্কা থেকে দৃষ্টি সরাতে পারছে না। সম্প্রত মার্কিন স্টক মার্কেটের ধসের জন্য একটি শক্তিশালী অনুঘটক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইয়েনের নতুন ক্যারি ট্রেড পজিশন ওপেন করার প্রশ্নটি উন্মুক্ত রয়ে গেছে, কারণ উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ এখন এই ধরনের ট্রেডকে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলেছে।
ইয়েনের দর প্রায় 145-148 রেঞ্জের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে, কিন্তু ঝুঁকি গ্রহণ থেকে প্রাপ্ত মুনাফার অনুপাত ইয়েনের আরও শক্তিশালীকরণ এবং USD/JPY পেয়ারে পতনের সংকেত দিচ্ছে। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে ফেডারেল রিজার্ভ আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ শুরু করার পরিকল্পনা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আরও একবার ডলারের দরপতন এবং ইয়েনের দর বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
ব্যাংক অফ জাপানের পাশাপাশি, দেশটির সরকারও বাজার পরিস্থিতির এইরূপ অস্থিরতায় হতবাক হয়ে পড়েছে, তার৫য়া এখন স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে যে গত সপ্তাহে ব্যাংক অফ জাপানের হকিস বা কঠোর অবস্থান দেশটিতে অনেক বেশি নেতিবাচক পরিণতি বয়ে আনতে পারে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়ে। ইয়েনের মূল্যের অত্যধিক বৃদ্ধি জাপানের অর্থনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে উদ্বেগ জাগিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এমনকি মজুরি বৃদ্ধির সর্বশেষ তথ্য, যা ভোক্তা ব্যয়ের জন্য ইতিবাচক, ইয়েনের মূল্যের অস্থিরতাকে প্রশমিত করতে পারেনি।
উচিদার অন্যান্য বিবৃতি সম্পর্কে আলোকপাত করতে গেলে বলা যায় তিনি পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছেন যে ব্যাংক অফ জাপানের জন্য সুদের হার বাড়ানো অব্যাহত রাখা কঠিন হবে। আপাতত, শুধুমাত্র এই বছরের ডিসেম্বরে সুদের হার বৃদ্ধির বিষয়টি বাস্তবসম্মত হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
USD/JPY পেয়ারের প্রযুক্তিগত চিত্র
মার্কিন ডলারের ক্রেতাদের জন্য, এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল হল 146.80 এর লেভেল। শুধুমাত্র মূল্যকে এই লেভেলে নিয়ে যেতে পারলে সেটি ক্রেতাদের 147.20 এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার সুযোগ দেবে। এই পেয়ারের মূল্যের পক্ষে এই লেভেল ব্রেক করে উপরে যাওয়া বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 147.50 এর এরিয়া এলাকা, যা অতিক্রম করলে 147.90-এর দিকে এই পেয়ারের মূল্যের তীক্ষ্ণ বৃদ্ধি দেখা যাবে। USD/JPY পেয়ারের দরপতনের ক্ষেত্রে, বিক্রেতারা মূল্যকে 146.50 এ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, এই রেঞ্জ ব্রেক করা হলে সেটি মার্কেটে ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে গুরুতর আঘাত হানবে এবং USD/JPY পেয়ারের মূল্যকে 146.22-এ পৌছে দেবে, যেখান থেকে মূল্যের 145.90-এ নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।