EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিংয়ের পরিকল্পনা, ৫ আগস্ট: নতুন ট্রেডারদের জন্য সহজ পরামর্শ

শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

শুক্রবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী র্যালি বা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গিয়েছে, যা শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের হতাশাজনক ফলাফল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব বৃদ্ধির কারণে হয়েছে। জুলাইয়ে ননফার্ম পেরোল সংখ্যা ছিল মাত্র 114,000, যা পূর্বাভাসের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এছাড়াও, দেশটির বেকারত্বের হার 4.1% থেকে 4.3% এ উন্নীত হয়েছে। তাই শুক্রবার প্যানিকের সাথে ডলার বিক্রি করা হয়েছিল।

আমরা বারবার বলেছি যে আনুষ্ঠানিক ইভেন্ট এবং প্রতিবেদনের ফলাফল উপর ভিত্তি করে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পায়, কিন্তু এবার পরিস্থিতির ভিন্ন ছিল। মার্কেটে সত্যিকার অর্থেই ডলার বিক্রি করার কারণ ছিল। স্বল্প-মেয়াদে ডাউন ট্রেন্ড চ্যানেল ব্রেক করে মূল্য এর উপরে কনসলিডেট হয়েছে। আমরা কি এই পেয়ারের মূল্যের আরও বৃদ্ধির আশা করতে পারি? আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, না, যেহেতু সামগ্রিক মৌলিক পটভূমি অপরিবর্তিত রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল হতাশ করে চলেছে, তবে ফেডারেল রিজার্ভ কঠোর আর্থিক নীতিমালা বজায় রেখে এই প্রভাবকে ছাপিয়ে গেছে। ফেড সেপ্টেম্বরে মুদ্রানীতি নমনীয় করা শুরু করবে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর সেপ্টেম্বরেই পাওয়া যাবে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

শুক্রবার, 5-মিনিটের টাইম ফ্রেমে বেশ কয়েকটি স্পষ্ট ট্রেডিং সিগন্যাল এবং অনুকূল মার্কেট মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। সকালে যখন এই পেয়ারের মূল্য 1.0797-1.0804 এর এরিয়া অতিক্রম করে তখন প্রথম বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। সেই সময় লং পজিশন ওপেন করা যেত। মার্কিন সেশনের শুরুতে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, তখন ব্রেক ইভেনে স্টপ লস সেট করা যেত, এবং লং পজিশন বজায় রাখা যেত। দিনের শেষ নাগাদ, পেয়ারটির মূল্য বেড়ে 1.0911 এ পৌঁছেছে, যেখানে প্রায় 100 পিপসের লাভ করা যেত।

সোমবারের ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

এক ঘন্টায় টাইম ফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের তীব্রভাবে বেড়েছে, ডাউন ট্রেন্ড চ্যানেল ব্রেক করেছে। আমরা মনে করি যে ইউরোর ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে এমন সব কারণগুলো সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগিয়েছে, তাই আমরা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকার আশা করছি না। হ্যাঁ, মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল শুক্রবারে আবার ডলারের দরপতন ঘটিয়েছে, তবে এর মানে এই নয় যে প্রতিদিন মার্কিন গ্রিনব্যাকের দরপতন হবে। 24-ঘন্টার টাইমফ্রেমে 1.06 এবং 1.10-এর মধ্যে একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। এখনও এই পেয়ারের মূল্যের এই রেঞ্জ ছাড়ার কোন কারণ দেখা যাচ্ছে না।

সোমবার, নতুন ট্রেডাররা 1.0888-1.0896 এরিয়া থেকে ট্রেড করতে পারে। যাইহোক, এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা আবার তীব্রভাবে হ্রাস পেতে পারে এবং শুক্রবারের পরে এই মূল্যের নিম্নগামী কারেকশন দেখা যেতে পারে।

5M টাইমফ্রেমে বিবেচনা করার মতো মূল লেভেলগুলো হল 1.0526, 1.0568, 1.0611, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971-1.0981। সোমবার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জুলাইয়ের পরিষেবা খাতের ব্যবসায়িক কার্যকলাপের সূচক প্রকাশিত হবে৷ ট্রেডারদের মার্কিন ISM সূচকের উপর দৃষ্টি দেয়া উচিত।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

1) সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।

2) যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।

3) ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।

4) ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।

5) প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।

6) যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

7) মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।

চার্টে কী আছে:

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।

লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।

MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।

নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।