EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিংয়ের পরিকল্পনা, ১৪ জুন: নতুন ট্রেডারদের জন্য সহজ পরামর্শ

বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

গতকাল, EUR/USD পেয়ার দিনের অর্ধেক সময় স্থবির অবস্থায় কাটিয়েছে এবং বাকি অর্ধেক মূল্য নিচের দিকে গেছে। কেন ডলারের দাম বেশি ছিল তা ব্যাখ্যা করা বেশ কঠিন ছিল। বুধবার, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কিন গ্রিনব্যাকের শক্তিশালী দরপতন শুরু করেছে। বিপরীতভাবে, ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠক শুধুমাত্র মার্কিন মুদ্রাকে সামান্য সমর্থন প্রদান করতে পেরেছিল, যদিও এর ফলাফল বেশ হকিশ বা কঠোর বলে মনে করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, ডলারের তীক্ষ্ণ দরপতন এবং সামান্য দর বৃদ্ধি উভয়ই পরিলক্ষিত হয়েছে। অতএব, মার্কেটের ট্রেডাররা কেবল বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি সংশোধন করেছে। উপরন্তু, 24-ঘণ্টার টাইমফ্রেমের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নগামী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। প্রতি ঘন্টার টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডীং চ্যানেল ছেড়ে চলে গেছে, তাই বর্তমান প্রযুক্তিগত চিত্র এই পেয়ারের মূল্যের আরও নিম্নগামী মুভমেন্টের সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করে। বর্তমানে ইউরো এবং পাউন্ডের মধ্যে প্রায় কোন সম্পর্ক নেই বললেই চলে, তাই ব্রিটিশ মুদ্রা নিজস্বভাবে ট্রেড চালিয়ে যেতে পারে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

5-মিনিটের টাইমফ্রেমে 1.0797-1.0804 এরিয়ার আশেপাশে চারটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, দিনের প্রথমার্ধে এই পেয়ারের মূল্য প্রায় ফ্ল্যাট ছিল এবং মার্কিন সেশনের শুরুতে, উৎপাদক মূল্য সূচক প্রকাশের পরে এই পেয়ারের মূল্যের নতুন ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। যাইহোক, ট্রেডাররা টানা দ্বিতীয় দিনে আরেকবার অযৌক্তিক দর বৃদ্ধি শুরু করতে পারেনি, তাই শেষ পর্যন্ত দরপতন শুরু হয়। দিনের শেষে, EUR/USD পেয়ার 1.0733 লেভেলে ট্রড করছে। সিগন্যালের ভিত্তিতে এই দরপতনের পূর্বাভাস দেওয়া বেশ কঠিন ছিল।

শুক্রবারে ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

প্রতি ঘণ্টার চার্টে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য অবশেষে একটি স্থানীয় নিম্নগামী প্রবণতা গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে, তবে প্রতিদিন ডলারের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা আশা করি পেয়ারটির মূল্য 1.0600, 1.0450, এমনকি 1.0200 লেভেলে নেমে যাবে। যাইহোক, এটা জানাও গুরুত্বপূর্ণ যে দাম মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্য এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাবে না। অন্যদিকে, আমরা ইউরোর মূল্য বাড়ার কোনো কারণ দেখছি না।

শুক্রবার, ট্রেডাররা 1.0726-1.0733 এরিয়ার আশেপাশে সিগন্যাল খুঁজতে পারেন। যখন এই রেঞ্জের নিচে মূল্যের কনসলিডেশন হয় তখন ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্য 1.0678 এর লেভেলে থাকা অবস্থায় নতুন শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারে। এই এরিয়া থেকে মূল্যের বাউন্স হলে আপনি লং পজিশন বিবেচনা করতে পারেন, কিন্তু এই পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম।

5M চার্টের মূল লেভেলগুলো হল 1.0483, 1.0526, 1.0568, 1.0611, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971-1.0981। আজ ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড ভাষণ দেবেন। যাইহোক, গত সপ্তাহে, লাগার্ডে মার্কেটের ট্রেডারদের ইতোমধ্যেই সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করেছে, তাই তার কাছ থেকে আজ নতুন কোন তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান ইউনিভার্সিটি কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনটি মার্কেটে নতুন উদ্দীপনা প্রদান করতে পারে, কিন্তু আমরা আশা করি না যে মার্কেটের ট্রেডাররা শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখাবে।

ট্রেডিংয়ের মূল নিয়মাবলী:

1) সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। যত দ্রুত এটি গঠিত হয়, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হয়।

2) যদি ফলস সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।

3) ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করাই ভালো।

4) ইউরোপীয় সেশনের শুরু থেকে মার্কিন ট্রেডিং সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেডগুলো খোলা উচিত যখন সমস্ত পজিশন ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।

5) আপনি 30-মিনিটের টাইম ফ্রেমে MACD সূচক থেকে সিগন্যাল ব্যবহার করে ট্রেড করতে পারেন, তবে এটি শুধুমাত্র শক্তিশালী অস্থিরতার মধ্যে ব্যবহার করা উচিত এবং একটি স্পষ্ট প্রবণতা থাকতে হবে যা ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত হওয়া উচিত।

6) যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

চার্ট কীভাবে বুঝতে হয়:

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।

লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।

MACD নির্দেশক (14, 22, এবং 3) একটি হিস্টোগ্রাম এবং একটি সিগন্যাল লাইন নিয়ে গঠিত। যখন মূল্য এগুলো অতিক্রম করে, সেটি মার্কেটে এন্ট্রির একটি সিগন্যাল। ট্রেন্ড প্যাটার্ন (চ্যানেল এবং ট্রেন্ডলাইন) এর সাথে এই সূচকটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এবং অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যেতে পারে এবং এগুলো একটি কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, সেগুলোর প্রকাশের সময়, আমরা মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়াতে যতটা সম্ভব সাবধানে ট্রেড করার বা বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিই।

ফরেক্সে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখা উচিত যে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হতে হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল এবং অর্থ ব্যবস্থাপনার বিকাশ হল দীর্ঘ মেয়াদে ট্রেডিংয়ে সাফল্যের চাবিকাঠি।