আরবিএ গভর্নর ফিলিপ লোয়ের বিবৃতির পরে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের দরপতন হয়েছে

অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সপ্তাহের বৈঠকে সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত ও আর্থিক নীতিমালায় কঠোরতা আরোপের চক্রের অবসান হচ্ছে না বলে সংবাদ আসার পরেও মার্কিন ডলারের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের দরপতন হয়েছে।

প্রয়োজনে দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেকোনো সময় তাদের নীতিমালা পর্যালোচনা করতে প্রস্তুত। এটি একমাত্র উপসংহার যা RBA-এর গভর্নর ফিলিপ লোয়ের আজকের বক্তৃতার পর টানা যেতে পারে।


লো উল্লেখ করেছেন যে পরিচালনা পর্ষদ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তুলনায় ধীরগতিতে লক্ষ্য স্তরে মুদ্রাস্ফীতির প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত। লো বলেছেন যে এই মাসে সুদের হার বর্তমান স্তরে রাখার সিদ্ধান্তের অর্থ এই নয় যে সুদের হার বৃদ্ধি করা শেষ হয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে পরিচালনা পর্ষদ আশা করেছিল যে মূল্যস্ফীতিকে একটি যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে লক্ষ্য স্তরে ফিরিয়ে আনতে মুদ্রানীতিতে আরও কিছু কঠোররা আরোপের প্রয়োজন হতে পারে। লোয়ের মতে, সুদের হার বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্তটি যুক্তিসঙ্গত এবং ভারসাম্যপূর্ণ, যা অর্থনীতি এবং মুদ্রাস্ফীতির উপর উচ্চ সুদের হারের প্রভাব মূল্যায়ন করতে আরও সময় দেবে। লো উল্লেখ করেছেন যে এই পদ্ধতিটি পূর্ববর্তী চক্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। উল্লেখযোগ্যভাবে, আরবিএ ছিল প্রথম ব্যাঙ্কগুলোর মধ্যে একটি যেটি আরও ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছিল। এদিকে প্রতিবেশী দেশ নিউজিল্যান্ডে অর্ধ পয়েন্টের সুদের হার বৃদ্ধি করে সবাইকে অবাক করেছে।নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সক্রিয়ভাবে নীতিমালা কঠোর করে চলেছে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে, সেইসাথে ব্যাংকিং সংকট এবং ফেডের উদ্ধার কার্যক্রমের কারণে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থ বাজারের অস্থিরতা উপেক্ষা করছে। এটি ইউরো এবং ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে। উভয় মুদ্রারই বুলিশ প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে যা এই বছরের শুরুতে শুরু হয়েছিল।

লো বলেছেন যে বিদেশে ব্যাংকিং চাপের প্রভাব অস্ট্রেলিয়ায় সীমিত ছিল, কিন্তু এর মানে এই নয় যে অস্ট্রেলিয়া সেগুলোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে অস্ট্রেলিয়াকে অন্যান্য দেশগুলো থেকে কোন দিক দিয়ে আলাদা, যেগুলো এখনও নীতি কঠোর করছে, লো তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছেন: মজুরি বৃদ্ধি, বন্ধক ঋণের দ্রুত বৃদ্ধি এবং মহামারীর আগের অবস্থায় শ্রমবাজারের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য বজায় রাখার ইচ্ছা। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে এই মুহূর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে তারা যদি 2025 সালের মাঝামাঝি সময়ে মুদ্রাস্ফীতি 3% এ ফিরিয়ে আনতে পারে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৃষ্ট ব্যাপক কর্মসংস্থান বজায় রাখতে পারে তবে এক বছর আগেই মূল্যস্ফীতি 3% এ ফিরিয়ে আনা যাবে এবং বেকারত্ব কমিয়ে শ্রমবাজারে ভাল ফলাফল দেখা যাবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া মূল্যস্ফীতি 2-3%-এ নিয়ে আসার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, এবং সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি 6.8% ছিল যা জানুয়ারিতে 7.4% ছিল।

AUD/USD এর প্রযুক্তিগত চিত্র সম্পর্কে বলতে গেলে বিক্রেতারা বর্তমানে মূল্য 0.6655 এর কাছাকাছি একটি নতুন নিম্নস্তরে নিয়ে আসার লক্ষ্য নির্ধাওরণ করছে। শুধুমাত্র সেখানে, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের ক্রেতা সক্রিয় হতে পারে. এই রেঞ্জের একটি ব্রেকআউট মূল্যকে 0.6630 এবং 0.6580 এর দিকে যাওয়ার পথ খুলে দেবে।

GBP/USD এর প্রযুক্তিগত চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। প্রবণতা বিকাশের জন্য, মূল্যকে 1.2460 এর উপরে রাখা এবং 1.2520 এর উপরে ব্রেক করা প্রয়োজন। শুধুমাত্র এই স্তরের একটি ব্রেকআউট 1.2560 স্তরে মূল্যের আরও পুনরুদ্ধারের আশাকে শক্তিশালী করবে। এর পরে, প্রায় 1.2590 এর দিকে তীব্র ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হবে। যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, বিক্রেতারা 1.2460 এর স্তর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জের ব্রেকআউট ক্রেতাদের অবস্থানকে প্রভাবিত করবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্যকে 1.2330-এ পৌঁছানোর সম্ভাবনার সাথে সর্বনিম্ন 1.2390-এ ঠেলে দেবে।

EUR/USD-এর প্রযুক্তিগত চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের এখনও মূল্য বাড়ানোর এবং মার্চ মাসে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ স্তর আপডেট করার সুযোগ রয়েছে। এটি করার জন্য, মূল্যকে 1.0930 এর উপরে রাখতে হবে, যা 1.0975 সীমার একটি ব্রেকআউটের সুযোগ দেবে। এই স্তর থেকে, 1.1035 আপডেট করার সম্ভাবনা সহ মূল্য 1.1000-এ ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্টের মূল্য কমে গেলে, বড় ক্রেতারা 1.0920-এর কাছাকাছি সক্রিয় হয়ে উঠবে। অন্যথায়, 1.0880 নিম্নস্তরে আপডেটের জন্য অপেক্ষা করা বা 1.0840 থেকে লং পজিশন খোলার জন্য অপেক্ষা করা উচিত হবে।