মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে

গত দুই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান ইকুইটি সূচকসমূহ পরিমিত বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে, নতুন বছরের সূচনালগ্নে ইকুইটি বাজারের সংশোধনকরণ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি সূচকের সংশোধনের পদক্ষেপ আগেরগুলো থেকে আরও বেশি উল্লেখযোগ্য হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞগণ চলতি বছরে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক আরোপিত কঠোর মুদ্রানীতির কারণে পুঁজিবাজারে ধসের আশংকা করছে। শুধুমাত্র মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকই কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের পথ বেছে নেয়নি। যদিও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য প্রস্তুত নয়, তবে প্যান্ডেমিক ইমারজেন্সি পারচেজ প্রোগ্রাম (পিইপিপি) চলতি বছরের শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ইতিমধ্যেই বেঞ্চমার্ক রেট বা মানদন্ডের হার বাড়িয়েছে, অন্যান্য নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠীও একই পথ অনুসরণ করছে। এর ফলে, পুঁজিবাজার চাপের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

গতকাল মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা বার্ষিক ভিত্তিতে ৭.০% ত্বরান্বিত হওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করা গিয়েছে। অতএব, ফেডারেল রিজার্ভের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবিক অর্থে ভোক্তা মূল্য সূচকে কোন প্রভাবই ফেলেনি। সবকিছুর উর্ধ্বে, আগামী কয়েক মাসে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের ফলে সৃষ্ট ওয়েভের কারণে মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এটি সরবরাহ শৃঙ্খল, শ্রমবাজার সহ পুরো বাজারকে প্রভাবিত করবে। যদিও অন্যান্য ধরনের তুলনায় ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত রোগীর অত বেশি জীবন সংকট থাকে না, তবে এটি অন্যান্য ধরন থেকে অনেক বেশি মাত্রায় সংক্রমিত করে। যার ফলে অনেক দেশেই স্বাস্থ্য খাত ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে, যেখানে পাইলটরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে যাওয়ার কারণে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়ে গিয়েছে। সুতরাং সরবরাহ শৃঙ্খলের অগ্রগতির কারণে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের যে আশা পাওয়েল করেছিলেন সেটি ভুল প্রমাণিত হতে চলেছে। একই সাথে, ফেডারেল রিজার্ভ কোয়ান্টিটেটিভ ইজিং (কিউই) প্রোগ্রামের আওতায় মার্কিন অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে টাকা ঢেলে চলেছে। মাসিক ভিত্তিতে ক্রয়কৃত অ্যাসেটের পরিমাণ বর্তমানে মোট $৭৫ বিলিয়ন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মার্চ মাসে ইতিমধ্যে কিউই প্রোগ্রামের সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারে। তবুও, তারা নগদ অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধি না পাওয়া পর্যন্ত অর্থনীতিতে অর্থ ঢেলে যেতে পারে। ফলস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা চাহিদা বেশি থাকলেও, তবে সরবরাহ চাহিদা মিটবে না। যার ফলে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৮.০%-এ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি মার্কিন ইক্যুইটি বাজারে উপকার বা ক্ষতি কোনটাই বয়ে আনবে না কারণ এটি স্পষ্ট যে ২০২২ সালে যে কোনও ভাবেই হোক না কেন আর্থিক নীতি কঠোর করা হবে৷ এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীরা।